• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
  • ||
  • আর্কাইভ

ঈদকে কেন্দ্র করে চাঁদপুরে কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত বৃদ্ধি

প্রকাশ:  ১০ মে ২০২১, ১৪:২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

সামনে ঈদ, চলছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকারের বিধিনিষেধ। এই ঈদকে কেন্দ্র করে চাঁদপুর শহরে কিশোর গ্যাং সদস্যদের উৎপাত বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাদের অনেককে বিভিন্ন সড়কে বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে মহড়া দিতে দেখা যাচ্ছে।
এদের বয়স হবে ১৫ থেকে ২০/২২ বছর। এপাচি, জিক্সার, পালসার, এফজেডসহ নামী-দামী বাইক নিয়ে এরা দল বেঁধে মহড়া দিচ্ছে। এদের চাল-চলন, পোশাক-আশাক, চুল ও সানগ্লাসের স্টাইল ব্যতিক্রম। রাস্তায় দলবদ্ধ হয়ে এরা হেলমেট ছাড়াই বেপরোয়া গতিতে বাইক রাইডে সকাল-বিকেল মেতে উঠতে দেখা গেলেও কেউ যেন এদের রুখতে পারছে না।
এদের অধিকাংশই মা-বাবার বখে যাওয়া সন্তান। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, এই বাইক আরোহী যুবকদের আয়ের উৎস কী? কীভাবেই বা নামীদামী এসব বাইক তাদের হাতে আসছে এবং এই বাইকের রোজকার তেল খরচেরই বা জোগান আসে কীভাবে?
চাঁদপুরের বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল শোরুমের ম্যানেজারের দেয়া তথ্য মতে, চাঁদপুরের রাস্তায় ১৫০ সিসির একটু পুরানো বাইক ১ লিটার তেলে ৩০ থেকে ৩৫ কিলোমিটারের বেশি মাইলেজ দেয়ার কথা না। এদিকে বাজারে ১ লিটার অকটেন ৯০ থেকে ১শ’ টাকাতেও খুচরা দোকানে বিক্রি হচ্ছে। তাহলে সারাদিনে কম করে হলেও গড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকার তেল খরচ হয়। যাদের অনেকের ঘরেই ‘নুন আনতে পানতা ফুরাবার’ মতো অবস্থা বলেও খবর রয়েছে।
বছরখানেক আগে বাইকে করে এসে কয়েকজন যুবক এক ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই করার অভিযোগ রয়েছে থানায়। এছাড়াও হরহামেশাই দোকানপাটে চুরি-ছিনতাই বেড়েছে। এর সাথে বাইক ছিনতাইও বেড়ে গেছে।
এদিকে ঈদ আসার আর মাত্র কয়েক দিন বাকি। ট্রাফিক পুলিশের ১৫০ সিসির বাইকগুলোতে তেমন কোনো অভিযানের নজির দেখা যাচ্ছে না। প্রতিদিনই দুপুর কিংবা বিকেলে শহরের গাছতলা ব্রীজ, পালবাজার ব্রীজ, বড়স্টেশন মোলহেড, ওয়্যারলেস মোড়, পুরাণবাজার ম্যারকাটিজ রোড, রয়েজ রোড, ব্রীজের গোড়াসহ শহরের বিভিন্ন রাস্তায় দ্রুত গতির বাইকগুলো নিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের দৌড়-ঝাঁপ শুরু হয়।
জানা গেছে, ছিনতাই, চুরি, মাদক বিক্রি, ক্রিকেট জুয়া, রাজনৈতিক দলের পরিচয় ব্যবহার করা এবং ভূমিদস্যুদের হাতিয়ার হয়ে নানাবিধ অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে এসব কিশোর। বাইক ছাড়াও শহরের পুরাণবাজার নদীর পাড়, মিল ফ্যাক্টরির আশপাশে এদের আড্ডা চোখে পড়ে। মোবাইল গেমস নিয়ে অনেকে মত্ত থাকে। সাধারণ মানুষ এদের দাপট দেখে ভয়ে কিছু বলতে সাহস পাচ্ছে না। যেজন্যে এই বখে যাওয়া কিশোর তরুণদের আইনের আওতায় আনা এখন সময়ের দাবি। এ অবস্থায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যগণ কঠোর না হলে ঈদকে কেন্দ্র করে এরা ঘটিয়ে ফেলতে পারে যে কোনো সহিংসতা।
পুলিশ, বিআরটিএ এবং প্রশাসনের পুরাতন ফাইল পত্র ঘাঁটলেই জানা যাবে এই বাইক আরোহী কারা, এসব বাইকের লাইসেন্স ও নাম্বার প্লেট সঠিক কিনা, ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে কিনা, কারা চালাচ্ছে এসব নামীদামী বাইক। সব খবর যেন থলের বিড়ালের মতো বেরিয়ে আসবে। এ ব্যাপারে বিআরটিএ-এর তৎপরতা জরুরি বলেও মনে করছেন সচেতন মহল।
জেলা পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, অপরাধীরা যে-ই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। যে কোনো সহিংসতা এড়াতে পুলিশ তৎপর।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, অবৈধ সব কিছুর বিরুদ্ধেই অভিযান চালানো হবে।