সংবাদ সম্মেলনে তিন প্রার্থীর অভিযোগ ফরিদগঞ্জের চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউপি নির্বাচনে ফলাফল জালিয়াতি করে চেয়ারম্যানসহ অন্য প্রার্থীদের বিজয় নিশ্চিত করা হয়

 গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ফরিদগঞ্জ উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১১নং চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীসহ তিন প্রার্থী। তারা ওই ইউনিয়নের গেজেট প্রকাশ স্থগিত রেখে পুনঃনির্বাচন দাবি করেন।
প্রেসক্লাব সভাপতি মোঃ কামরুজ্জামানের সভাপতিত্বে ২২ জানুয়ারি শনিবার সকালে ফরিদগঞ্জ প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিন বিজিত প্রার্থীর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাছির আহমেদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অপর দুই প্রার্থী সংরক্ষিত ১নং ওয়ার্ডের প্রার্থী মর্জিনা আক্তার আঁখি এবং সাধারণ ১নং ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী আমিন খান।
লিখিত বক্তব্যে প্রার্থীরা বলেন, গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ১১নং চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩নং ওয়ার্ডের তিনটি কেন্দ্রে সীমাহীন অনিয়ম ও জালিয়াতির আশ্রয় নেয়া হয়েছে।  
তিনটি কেন্দ্র থেকে ব্যালট, ব্যালটের মুড়ি ও সিল ছিনতাই করে কেন্দ্রের বাইরে ও ভেতরে ওই ব্যালটে সিল মারা, অবৈধভাবে সিল মেরে ওই ব্যালট ভোটের বাক্সে ফেলা, প্রার্থীর এজেন্ট বের করে দেয়া, প্রতিদ্বন্দ্বী অন্যান্য চেয়ারম্যান প্রার্থীর পক্ষের সিল মারা ব্যালট নৌকার পক্ষে গণনা এবং একইভাবে ১, ২ ও ৩নং কেন্দ্রে ভোট জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বী একাধিক সাধারণ সদস্য ও একজন সংরক্ষিত সদস্য প্রার্থীর পক্ষের ফলাফল পাল্টে দিয়ে অপর সদস্যকে অবৈধভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।
এছাড়া চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ভোটের সংখ্যার সাথে সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্যগণের ভোটের সংখ্যার মিল নেই। ১নং কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ২৬১৩টি। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ফলাফল শিটে মোট কাস্টিং ভোটের সংখ্যা ১৭১৭টি। সংরক্ষিত সদস্যদের মোট কাস্টিং ভোটের সংখ্যা ১৫৭৮, সাধারণ সদস্যদের মোট কাস্টিং ভোটের সংখ্যা ১৬১৩টি।
নির্বাচনের কয়েকদিন পর গত ৮ জানুয়ারি পূর্ব সন্তোষপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের পাশর্^বর্তী বাগানে বেশ কিছু সিল মারা ও সিল ছাড়া ব্যালট পেপার, মুড়ি ও সিল পরিত্যক্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করে থানা পুলিশ। ওইদিনই রাতে ঘটনা উল্লেখ করে প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী বাছির আহমেদ লিখিত অভিযোগ করেন। এছাড়া অনিয়ম ও জালিয়াতির বিষয়ে রিটার্নিং অফিসারকে জানানো হলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেন নি। ফলে বাধ্য হয়ে সংবাদ সম্মেলন করছি।
১, ২ ও ৩নং সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সদস্য প্রার্থী মাইক প্রতীকের মর্জিনা আক্তার আঁখি ও ১নং ওয়ার্ডের সাধারণ সদস্য প্রার্থী আমিন খান জানান, নির্বাচনের দিন ২নং কেন্দ্র সন্তোষপুর দারুসসুন্নাত ইসলামিয়া আলিম মাদরাসা কেন্দ্র ও  ৩নং কেন্দ্র সন্তোষপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল থেকে ককটেল বিস্ফোরণ, হাঙ্গামা ও সংঘর্ষ সৃষ্টি করে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়া হয়। এ সময় কৌশলে অবৈধভাবে ব্যালট পেপার ছিনিয়ে কেন্দ্রের ভেতরে ও বাইরে ব্যালটে সিল মেরে বাক্সে ঢুকানো হয়। এ সকল ঘটনার জেরে সন্তোষপুর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ প্রায় এক ঘন্টা বন্ধ থাকে এবং দুষ্কৃতকারীরা ব্যালট পেপারে অবৈধভাবে সিল মেরে ভোটের বাক্সে ঢুকায়।
তাই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে অনিয়ম ও জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধ চেয়ারম্যান এবং সদস্যদের পক্ষে গেজেট প্রকাশ ও শপথ গ্রহণ স্থগিত রেখে পুনঃনির্বাচনের দাবি করেন তারা।
উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে চরদুঃখিয়া পূর্ব ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল হাসান মিরাজ নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন।