• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
  • ||
  • আর্কাইভ

পুত্র-পুত্রবধূ-নাতি নিয়ে মেয়ের বাড়ি যাওয়া হলো না মনোয়ারার

প্রকাশ:  ২৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:৫৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

মেয়ের শ্বশুরবাড়ি বরগুনার ঢলুয়ান ইউনিয়নের চরকগাছিয়া গ্রামে। তাই মেয়েকে দেখতে বৃহস্পতিবার ছেলে, পুত্রবধূ আর তিন নাতি-নাতনিকে নিয়ে সদরঘাট থেকে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চের যাত্রী হন মনোয়ারা বেগম (৬০)। কিন্তু লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডে সব কিছুই যেন এলোমেলো হয়ে যায়। দগ্ধ হয়ে মারা যান মনোয়ারা বেগম, তার পুত্রবধূ ও এক নাতনি।

বেয়াই হাসেম সর্দারের বাড়ি চিরনিদ্রায় শায়িত হয়েছেন মনোয়ারা বেগম। একই সঙ্গে দাফন করা হয়েছে তার পুত্রবধূ রুমা (২৬) ও নাতনি অহনার (৫) মরদেহ। নিখোঁজ আছে নাতি ইমন (১২) ও জীবন (৮)। দগ্ধ হয়ে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন মনোয়ারা বেগমের ছেলে কালু (৩০)।

শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) জানাজা শেষে মরদেহ দাফনের আগে মনোয়ারা বেগমের ছোট ছেলে মুকুল তাদের শনাক্ত করেন। এ সময় কবরস্থান এলাকায় আগতদের চোখও অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ে। বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান এ সময় দাফন বাবদ তার হাতে ৭৫ হাজার টাকা তুলে দেন।

সন্ধ্যা ৬টার দিকে মনোয়ারা বেগম, তার পুত্রবধূ ও নাতনির দ্বিতীয় জানাজা শেষে হাসেম সর্দারের বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।

মুকুল জাগো নিউজকে বলেন, ১৫ বছর আগে আমার বোনের বরগুনায় বিয়ে হয়। আমাদের বাড়ি মাদারীপুর হলেও মাকে নিয়ে ঢাকায় বসবাস করি। লঞ্চে আগুন লাগার খবর শুনে ঢাকা থেকে ঝালকাঠি আসি। দাফনের আগেই তিনজনকে শনাক্ত করতে পেরেছি।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার পোনাবালিয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকার সুগন্ধা নদীতে বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ৩টার দিকে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত ৪১ জনের প্রাণহানি হয়েছে। নিখোঁজ শতাধিক।

আগুনে দগ্ধ ৮১ জনের মধ্যে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৪৬ জন। ১৯ জনকে পাঠানো হয়েছে ঢাকায়। ১৬ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

এদিকে পুড়ে যাওয়া লঞ্চটিতে কতজন যাত্রী ছিল তার সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। বিআইডব্লিউটিএ থেকে জানানো হয়েছে, লঞ্চটিতে প্রায় ৪০০ যাত্রী ছিল। তবে লঞ্চ থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের অনেকে বলছেন, এই লঞ্চে যাত্রী ছিল ৮০০ থেকে এক হাজার।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমাদের হিসাব মতে লঞ্চে ৩৫০-এর মতো যাত্রী ছিল। এর বেশি থাকলে তদন্ত করে দেখা হবে।

আগুনে পোড়া লঞ্চ পরিদর্শনে গিয়ে শনিবার সকালে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শাজাহান খান জাগো নিউজকে বলেন, ইঞ্জিনে বিস্ফোরণ থেকে লঞ্চে আগুন লেগেছে। এখনো লঞ্চের যে যাত্রীদের পাওয়া যায়নি, তাদের খুঁজতে কাজ করছে ডুবুরি দল। তাদের সঙ্গে নদীতে নৌকা নিয়ে নামেন নিখোঁজদের স্বজনরাও।

সর্বাধিক পঠিত