• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশে কোনো কিছু চাপা থাকে না

প্রকাশ:  ০৭ অক্টোবর ২০১৭, ১৬:৪৩ | আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০১৭, ২২:৩৮
বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম
প্রিন্ট

শরীর সাহায্য না করলে কোনো কিছুই করা যায় না। গত শনিবারও লিখতে পারিনি। অর্ধেক তৈরি করে শত চেষ্টা করেও আর এগোতে পারিনি। অনেক সময় যা ভাবি তাই লিখে ফেলি। কিন্তু আবার কখনো কখনো ভাবনায়ই আসে না, সব এলোমেলো হয়ে জড়িয়ে যায়। সেদিন বাংলাদেশ প্রতিদিনে চ্যানেল আইয়ের জন্মতিথি নিয়ে দু’কলম লিখেছিলাম। ভালো লাগেনি তাই লিখেছি। এমনিতে তোফায়েল আহমেদ দেখতে-শুনতে ছোটখাটো মানুষ হতে পারেন। কিন্তু ’৬৯-এর ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের এই মহানায়ককে ইদানীং লম্বাচূড়ারা যদি কনুই মেরে পেছনে ফেলেন তার খারাপ না লাগলেও আমার অবশ্য অবশ্যই খারাপ লাগে। একটা দেশে সেই দেশকে অস্বীকার করে নতুন দেশের পতাকা তোলা চাট্টিখানি কথা নয়। সেটা জীবনে একবারই ঘটে। স্বাধীন দেশে সেই দেশের পতাকা তোলা যত সোজা, পরাধীন দেশে স্বাধীনতার পতাকা তোলা অত সোজা না। সেই পতাকা উত্তোলক আ স ম আব্দুর রবকে কোথাও এতিমের মতো দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলে কেন খারাপ লাগবে না? 

আজকাল মিডিয়ার ঝলমলে পর্দায় সবার মুখ দেখানোর শখ। কিন্তু অমন জাতীয় নেতাদেরও তেমন হবে কেন? তাই থাকতে না পেরে দু’কথা লিখেছি। দিনটা ছিল ১ অক্টোবর আশুরা। ওইভাবে টেবিলের এক পাশে বড় বড় নেতা, অন্য পাশে তৃতীয় মাত্রার উপস্থাপক জিল্লুরের ইচা মাছের মতো ছটফটানি বড় দৃষ্টিকটুর ঠেকেছে। আয়ুব খানের শেষের দিকে আমাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ যেমন কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রাখত, সেদিন অনেকটা তেমন দেখাচ্ছিল। আর জিল্লুরের লাফালাফিতে মনে হচ্ছিল সেই সব বাকিরা কিছু না। একটা ইলেকট্রনিক মিডিয়া এমন হলে দেশের ভারসাম্য থাকে? লেখাটি নিয়ে বহু মানুষ যোগাযোগ করেছে বলে তুলে ধরলাম।

মাসের বেশি হয়ে গেল সুস্থতার নাগাল পেলাম না। রোহিঙ্গা সমস্যা, তাদের দুঃখ-দুর্দশা আরও বেশি অসুস্থ করে তুলেছে। কেউ কেউ মনে করেন আগামীকাল অথবা পরশু রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। আবার কেউ ভাবছেন এরা আমাদের মাথার ওপর বোঝা হয়ে চাপতে এসেছে। এর কোনোটাই নয়। বোঝাকে কাজে লাগাতে না পারলে সে তো বোঝা হবেই। আর সঠিক পরিচালনা করতে পারলে অনেক বোঝাই বোঝা থাকে না, বরং শক্তিতে পরিণত হয়। কোনটা করব এটা আমাদের ওপর নির্ভর। ২৫ আগস্টের পর রোহিঙ্গাদের যে জোয়ার শুরু হয়েছে, আমরা কোনো ব্যাপারেই যতটুকু যা করার তা করতে পারিনি। আমাদের অনেক কাজই অন্যরা করে দিয়েছেন। কেউ স্বীকার করুন আর না করুন, এ পর্যন্ত যতটা সম্ভব মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা গুনে গুনে পা ফেলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘বিএনপি খুনি তাদের সঙ্গে আবার ঐক্যের কি, তাদের সঙ্গে আলোচনা নয়।’ এসবকে রাজনীতির কথার কথা হিসেবে যদি পাশে সরিয়ে রাখা যায়, যেটা মোটেই অসম্ভব নয়। কারণ রাজনীতির শেষ কথা নেই। জাতিসংঘের বক্তৃতায় তিনি যথার্থ পাঁচ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন। তার একটা বাস্তবায়িত হলেই রোহিঙ্গা সমস্যার ১২ আনা সমাধান হয়ে যায়। 

কেন জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ অঞ্চল করা যাবে না? নিশ্চয়ই যাবে। আমরা কি কখনো তলিয়ে দেখার চেষ্টা করেছি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে গেলে এবার জাতিসংঘে যে গুরুত্ব এবং সম্মান পেয়েছেন তা কি পেতেন? শত শত হাজার হাজার ঘরবাড়ি পুড়ে, মেয়েদের সম্মান সম্ভ্রম নষ্ট করে মানুষ হত্যা করে সু চি বিশ্ববাসীর কাছে যতটা ঘৃণার শিকার হয়েছেন, আমাদের বর্ডার গার্ড রাইফেল উঁচিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলে তার চাইতে অনেক বেশি আমরা ঘৃণিত হতাম। সু চি অথবা মিয়ানমার মানুষের মর্যাদাবোধ থাকলে তারা নাফ নদীতে ডুবে মরত, কারণ কত মর্যাদা দিয়ে সারা পৃথিবী সু চিকে কত উচ্চাসনে বসিয়ে ছিল। কত সম্মান দিয়েছিল অক্সফোর্ড। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্দয় আচরণের জন্য সেই অ্যাওয়ার্ড কেড়ে নিয়ে ছবি নামিয়ে ফেলেছে। দানবীয় কোনো শক্তি ফ্রিডম অব দ্য সিটি অব অক্সফোর্ড অ্যাওয়ার্ড পেতে পারে না। যখন সম্মানী মানুষের সম্মান কোনো পশুশক্তি জোর করে নষ্ট করে, তখন সেটা হয় অসভ্যতা। কিন্তু দানবীয় প্রকৃতির কাউকে ভুলে সম্মান দিয়ে সভ্য জাতি বা কোনো সভ্য মানুষ যখন ভুল বুঝতে পেরে, অসভ্যকে দেওয়া সম্মান সভ্যরা ফিরিয়ে নেয়, তখন সেটা হয় নতুন ইতিহাস। সু চির ক্ষেত্রে অথবা বর্মিদের ক্ষেত্রে তেমনটাই হয়েছে।

অনেক দিন ধরে বলছি, রোহিঙ্গা প্রশ্নে প্রকৃত অর্থেই একটি জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন। সেটা দেশে-বিদেশে সর্বক্ষেত্রে প্রয়োজন। কিন্তু সেদিকে খুব একটা এগোয়নি। মাননীয় নেত্রীকে সেই ছেলেবেলা থেকে চিনি-জানি। বহুদিন একসঙ্গে চলাফেরা করেছি। তার জীবনে দুর্ভাগ্য কিনা বলতে পারব না, তিনি তেমন যোগ্য লোক পান না। তা না হলে এই সেদিন অং সান সু চির এক কাউন্সেলর এসে কী সব আলোচনা করে গেল, আমার তো মনে হলো ’৭১-এ কত মা-বোনকে হত্যা করে, সম্ভ্রমহানি করে স্বাধীনতার পর ’৭৩-এ ভুট্টো যেদিন এসেছিল সেদিন তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল রাস্তার দুপাশে পাকিস্তানি দালালরা ছিল ভুট্টোকে স্বাগত জানাতে। মিয়ানমার মন্ত্রীর ঢাকায় আগমন এবং প্রথম বৈঠকেই আমাদের হারিয়ে দিয়ে যাওয়া একি সেই ’৭৩-এর পুনরাবৃত্তি? বর্তমান রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশ আর মিয়ানমার নয়, এটা একটা আন্তর্জাতিক সমস্যা। জাতিসংঘ প্রথম উদ্যোগ নিয়েছে। জাতিসংঘ মিয়ানমার কার্যকলাপের নিন্দা করেছে, আমরা প্রথম দিনেই জাতিসংঘকে না নিয়ে আলোচনা শুরু করে দিলাম? এমনিতেই সু চি সেনাদের নিচে, তার মন্ত্রী আরও নিচে। সে আসায় পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাদের হুমড়ি খেয়ে পড়ার কি কোনো প্রয়োজন ছিল। 

আলোচনা শেষে মিয়ানমার মন্ত্রী মিডিয়ায় একটি কথাও বললেন না। আমরা হয় হয় করে অনেক কথা বলে বসলাম। মিয়ানমার মন্ত্রী যে আমাদের দেশে এলো, আমরা কি একটুও প্রতিবাদ করতে পারতাম না? বিরোধী দল বিএনপি কত কথা বলে, কিন্তু মিয়ানমার প্রতিনিধিকে কালো পতাকা দেখাতে পারল না? পুরান ঢাকা থেকে ৫০টি ছেঁড়া জুতা কিনে এনে তার গাড়িতে ছুড়ে মারতে পারত না? কালো পতাকা দেখানো, নিন্দাবাদ জানানো, পচা আন্ডা ছুড়ে মারা এসব সন্ত্রাস নয়, এসব প্রতিবাদ। ১৯৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর মিত্র বাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান লে. জে. অরোরা যখন তেজগাঁও বিমানবন্দরে আসেন, সেখান থেকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পথে অরোরা ও নিয়াজির পরের গাড়িতেই আমি ছিলাম। রাস্তার দুপাশের মানুষ কত থুতু ছিটিয়ে ছিল যার কিছু থুতু আমার গাড়িতেও পড়েছিল। আমরা তো মিয়ানমার মন্ত্রীকে এক ছটাক থুতু ছুড়তেও পারলাম নাÑ তাহলে কি আমাদের জাতীয় চেতনা ভোঁতা হয়ে গেছে অথবা এসিতে বসে আমরা আন্দোলনবিমুখ হয়ে গেছি? বিষয়গুলো রাজনৈতিক দলগুলোকে যেমন, তেমনি সাধারণ মানুষের কাছে আমার নিবেদন মানুষ হয়ে আমরা যদি মানুষের মতো আচরণ করতে না পারি, তাহলে সভ্য সমাজে আমাদের পরিচয় দিতে কষ্ট হবে। আর স্রষ্টার এজলাসে তো আমরা কোনো জায়গাই পাব না।

রোহিঙ্গা সমস্যা কীভাবে আমরা মোকাবিলা করব, সমস্যা সমাধানে সারা পৃথিবীকে আমাদের সঙ্গে নেব নাকি একা হয়ে যাব? পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে মিয়ানমারের সঙ্গে প্রথম বৈঠকে আমরা কাউকে পাইনি, কাউকে চাইওনি। বরং একা হয়ে পড়া শুরু করেছি। এই যে কতজন কত সাহায্য পাঠিয়েছে, ভবিষ্যতে এর চাইতে শতগুণ পাঠাবে; কিন্তু কারো সঙ্গে আমরা তেমন যোগাযোগ করিনি। রোহিঙ্গা প্রশ্নে এবার বিশ্বজনমতের প্রতীক জাতিসংঘকে সম্পূর্ণ এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। এসব আমাদের কূটনৈতিক দক্ষতার অভাবের ফল। শুনছি আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আসবেন। তিনি এসে কী করবেন তা তিনিই জানেন। গণতান্ত্রিক দেশের জন্য এটাও এক মারাত্মক অশুভ সংকেত। গণতান্ত্রিক দেশে রাস্তাঘাটে জনগণ যা বলে, যা ভাবে সরকার তেমনই করে। কিন্তু কেন যেন আগের সরকারও জনগণের কথা ভাবত না, এ সরকারের ভাবনাও জনগণ বুঝতে পারে না। জাতীয় সমস্যায় সরকার ও জনগণের ভাবনার মিল থাকতে হয়। কোনো কাজ করতে গিয়ে উনিশ-বিশ হতে পারে। কিন্তু জনগণ আর সরকারের চিন্তাচৈতন্যে কখনো নয়-ছয় হয় না। অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে বলতে বাধ্য হচ্ছি, গত এক মাসে দেশে-বিদেশে আমাদের রাজনীতি কূটনীতি যতখানি হওয়া উচিত ছিল, ততখানি হয়নি।

পত্রিকায় দেখছি রোহিঙ্গা প্রশ্নে ভারত তার সুর বদলেছে। আমার মোটেও তেমন মনে হয় না। ভারত আগাগোড়া যা করার তাই করেছে। যথার্থ একজন সফল সরকারপ্রধানের মতো মিয়ানমার গিয়ে নরেন্দ্র মোদি তার স্বার্থের কথা বলেছেন। তিনি কখনো মিয়ানমার বা সু চির গণহত্যাকে সমর্থন করেননি, ভবিষ্যতেও করবেন না। ভারত কখনো কোথাও নির্যাতিত মানুষকে উপেক্ষা করেনি। ভারতের প্রাণ যেখানে, সেখানে মানবতাবর্জিত কোনো নীতি গ্রহণ করতে পারেন না। জাতীয় স্বার্থে মিয়ানমারের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য, রাজনীতি-কূটনীতিতে সময় সময় জোয়ার-ভাটা আসবে। কিন্তু ভারত ভারতের জায়গায়, মিয়ানমার মিয়ানমারের জায়গায় থাকবে। রোহিঙ্গা সমস্যায় ভারত আমাদের কতটা পাশে থাকবে, সেটা আমাদের দক্ষতা, যোগ্যতা ও নেতৃত্বের ওপর নির্ভর করে। ভারত তার জাতীয় স্বার্থে মিয়ানমারের পাশে থাকতে পারে, কিন্তু গণহত্যা প্রতিরোধে সে সব সময় আমাদের পাশে থাকবে, কখনো হত্যাকারীর পাশে যাবে না। আমরা কেউ কি ভারতকে জিজ্ঞেস করেছি, রাখাইন রাজ্য জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করায় ভারত কি সু চির সঙ্গে? আমরা বড় বেশি নিজের দিকে ঝোল টানি। সেজেগুজে আমাদের পক্ষে না দাঁড়ালেই তাকে পছন্দ করি না। চলার পথে কারো সঙ্গেই একেবারে শতভাগ মিল হয় না। কিছু মিল, কিছু অমিল নিয়েই মানবজীবন। রাষ্ট্র তো বহু মানুষের সমাহার। সেখানে আরও বেশি মত-পথের অমিল থাকার কথা। সেই অমিল থেকে যতটা মিল খুঁজে বের করা যায় এবং তা কাজে লাগানো যায় সেটাই রাজনীতি, সেটাই কূটনীতি। চাণক্যের দেশ ভারত। তারা এত সহজে কূটনীতির ক্ষেত্রে তাদের সর্বনাশ করবে, ক্ষতি করবে পরীক্ষিত বন্ধু বাংলাদেশকে হারাবে, এটা গাছের মগ ডালে বসে ডাল কাটার শামিল। যদিও কখনো পুরোপুরিভাবে ভারতকে আবিষ্কার করতে পারিনি। তবু তাদের সঙ্গে যখনই মেলামেশা করেছি হৃদয়ের গভীরতা খোঁজার চেষ্টা করেছি, তখন সব সময়ই তাদের মানবই মনে হয়েছে। তাই কখনো তাদের প্রতি বিশ্বাস হারাইনি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
অনেক দিন পর আজ দেশে ফিরছেন। আপনার আগমন শুভ হোক। পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে জাতির সেবায় নিজেকে সম্পূর্ণ নিয়োজিত করতে সক্ষম হোন। আপনার অনুপস্থিতিতে আপনার খাদ্যমন্ত্রী সম্পর্কে দেশবাসীর কাছে নিবেদন করেছিলাম। আপনি যখন দুস্থ মানবতার সেবায় চরম ঝুঁকি নিয়ে এক দুঃসাহসী পদক্ষেপ নিয়ে বিশ্বজগতের কাছে নন্দিত হয়েছেন, ঠিক সেই সময় আপনাকে, বাংলাদেশকে, আমাদের সবাইকে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম একেবারে ডুবিয়েছে। যে সময় হাজার হাজার মানুষ আব্রু ও জীবন বাঁচাতে আমাদের দেশে এসেছে, ঠিক সেই সময় স্ত্রীর সঙ্গে কোনো মন্ত্রী সেই দানবের দেশে যেতে পারে- এটা আমাদের কল্পনার অতীত। সামান্য বিচার-বিবেচনা ও মানবিক গুণাগুণ থাকলে একটা দেশ ও জাতিকে কেউ এভাবে ডুবাতে পারে না। আমার মনে হয় না, ওরকম একজন ভদ্রলোকের কাছে আপনার কোনো দায়বদ্ধতা থাকতে পারে। যদি তা না থেকে থাকে, তাহলে ভদ্রলোককে বরখাস্ত করুন। নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় মানুষ যতটা খুশি হয়েছে, খাদ্যমন্ত্রীকে বরখাস্ত করলে ততটা না হলেও কাছাকাছি খুশি হবে। আপনার সরকারের প্রতি আস্থা বাড়বে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশে কোনো কিছু চাপা থাকে না। দুদিন আগে আর পরে সবই বেরিয়ে যায়। শোনা যাচ্ছে আপনার মন্ত্রী এবং মন্ত্রণালয়ের লোকের যোগসাজশে চালের এমন অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি ঘটেছে। একে তো বউ নিয়ে মিয়ানমার গিয়েছিলেন চাল কিনতে যে সময় মিয়ানমার চাল সোনার দানা হলেও বাংলাদেশের মানুষ গ্রহণ করবে না, ঠিক তখন গিয়েছিলেন আতপ চাল কিনতে। দেশের মানুষ এখন আর আতপ চাল খায় না। অন্যদিকে চালের মিলমালিকদের সঙ্গে যোগসাজসে বাংলাদেশের লক্ষ-কোটি মানুষের যে সর্বনাশের কারণ হয়েছেন এর যথাযথ শাস্তি না হলে দুর্নীতিবাজরা সাহস পেয়ে যাবে।

লেখক: রাজনীতিক ও কলাম লেখক

সূত্র: দৈনিক আমাদের সময়