• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
  • ||
  • আর্কাইভ

ঈদ আনন্দ সবার তরে

মুফতি আহমদ আবদুল্লাহ

প্রকাশ:  ১২ মে ২০২১, ০৯:৫০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

বর্ষপ্ররিক্রমায় পবিত্র ঈদুল ফিতর পুনরায় আমাদের দ্বারে সমাগত। এই আনন্দময় পবিত্র দিনে সমগ্র বিশ^বাসী, বিশেষ করে উম্মতে মুহাম্মদীকে জানাই আমাদের ঈদ মোবারক। সবার জীবনে ঈদ বয়ে আনুক আনন্দের বার্তা। ঈদ শব্দের অর্থও আনন্দ, এমন আনন্দ যা বারবার ঘুরে আসে। এই সুবাদে ঈদ উম্মতে মুহাম্মদ (সাঃ)-এর উৎসব পর্বও বটে। ঈদ বিশ^ মুসলিমের একটি বার্ষিক সম্মিলন ও উৎসবের দিন। ঈদের দিন সবাই পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঈদগাহে ছোট-বড়, ধনী-নির্ধন, আমীর-ফকীর একই কাতারে দাঁড়িয়ে বিশেষ ইবাদত করে থাকে। উম্মতে মুহাম্মদীকে মহান রাব্বুল আলামিন বিশেষ কিছু বরকতময় অনুষ্ঠান প্রদান করেছেন, যা অন্য কোনো নবী-রাসুলের কাওম লাভ করতে পারিনি। তন্মধ্যে পরস্পর ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসা, প্রীতি ও সৌহার্দ্যরে এক অনুপম দৃষ্টান্ত প্রদর্শনের অনুষ্ঠান ঈদ।
ঈদের উৎসব হচ্ছে একটি সুশৃঙ্খল, অথচ প্রাণোচ্ছল উৎসব। এ উৎসবে আমরা একে-অন্যকে ভালোবাসতে শিখি, বিশ^াস করতে শিখি এবং আন্তরিকতার মনোভাবে সবার সঙ্গে মিলিত হই। এটা সত্য যে, পৃথিবীতে আমাদের সময় খুব কম, কিন্তু এই সময়ের মধ্যেই ঈদ একটি উপঢৌকনের মতই আসে। প্রতিদিনের জীবনযাত্রার মাঝে হঠাৎ একটি দিন নতুন ব্যঞ্জনায় মুখরিত হয়। সেদিনকার প্রত্যুষকে অন্যদিনের প্রত্যুষের চেয়ে ভিন্ন মনে হয়, স্নিগ্ধ বাতাস প্রবাহিত হয়, গাছের পাতা নড়ে এবং কিছু পুরনো পাতা ঝরে পড়ে। পাখিরা কলরব করে ওঠে আর আমরা জানি নতুন এক শুভ লক্ষণ এলো। বাইরের পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে গাছপালাকে সজীব মনে হয়। এ ভাবেই আমরা ঈদের দিনে একটি নতুন মাধুর্য এবং তাৎপর্যের মধ্যে জেগে ওঠি। ঈদ আসে বিশ^ মুসলিমের দ্বারপ্রান্তে বাৎসরিক আনন্দের বার্তা নিয়ে, আসে সীমাহীন প্রেম-প্রীতি, ভালোবাসা ও কল্যাণের সওগাত নিয়ে। ঈদের দিনে মানুষ সকল প্রকার ক্ষতি ও দুঃখের ঊর্ধ্বে উঠে একটি আনন্দের মাঝে মিলিত হবার চেষ্টা করে। কর্মক্ষেত্রে আমাদের যে মিলন সে মিলন প্রথাসিদ্ধ। সেখানে অসহিষ্ণুতা আছে, আছে ক্ষোভ, হতাশাও আছে, শক্তি ও পৌরুষের দম্ভ আছে। কিন্তু ধর্মীয় মিলনে একটি অভাবনীয় অভিব্যক্তি আছে। এই মিলনে নেই অহমিকা। নেই ঔদ্ধত্য। আছে একটি নিবেদনের উপলক্ষে সকলের মধ্যে সাযুজ্য নির্মাণের চেষ্টা।
ঈদুল ফিতর হলো, রোজার এক মাসের কঠোর প্রশিক্ষণ শেষে প্রশিক্ষণার্থীর আনন্দ উপহার। তবে সে উপহার একান্তই একা ভোগ করার জন্যে নয়, সকলকে নিয়ে ভোগ করার জন্যে। ঈদের আনন্দ, ঈদের পুত-পবিত্র সওগাতের অনন্য বৈশিষ্ট্য এখানেই। আসলে ইসলামের মর্মবাণী তথা মূল সীমাটাই এ রকম। ‘টোটালিটারিয়াল’ বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল। ঈদুল ফিতরের আনন্দ সম্ভার উপভোগের ক্ষেত্রেও একই চেতনা ক্রিয়াশীল। এখানেও সমস্ত আনন্দ, সমস্ত খাদ্যসম্ভার, পোশাক-পরিচ্ছদ তথা ঈদের সার্বিক আয়োজনে সবার অধিকার রয়েছে। এভাবেই ইসলাম একটি পারিবারিক ও ব্যক্তিক আনন্দ অনুভূতিকে সামষ্টিক ও বহুমাত্রিক ব্যঞ্জনায় সমুদ্ভাসিত করে। সমাজের দুস্থ, নিঃস্ব, দরিদ্র ও হতভাগ্যদের প্রতি করুণার হাত সম্প্রসারিত করে আমরা এই বহুমাত্রিকতার বাস্তবায়ন ঘটাতে পারি। আর তখনই ঈদ তার সত্যিকার মহিমায় মহিমান্বিত হবে।
হিজরতের পূর্বে মুসলমানদের মাঝে ঈদের প্রথা ছিল না। মদীনায় প্রিয়নবী (সাঃ)- এর হিজরতের পূর্বেই বিপুল সংখ্যক মদিনাবাসী ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নেয়। তাদের মধ্যে তখনও মেহিরজান ও নওরোজ নামক দুটি উৎসবের রেওয়াজ ছিল। হজরত আনাস (রাযিঃ) বর্ণনা করেন, ‘রাসুল (সাঃ) মদিনায় হিজরত করে দেখতে পান, মদিনাবাসী বিশেষ দুটি দিনে খেলাধুলা ও আমোদ-প্রমোদে কাটিয়ে দেয়। প্রিয়নবী (সাঃ) প্রশ্ন করেন, ‘এ দুটি দিবসের স্বরূপ ও তাৎপর্য কী?’ তারা জানালো, ‘আমরা জাহিলিয়াতের যুগে এদিন দুটি খেলাধুলা ও আমোদ-প্রমোদের জন্যে উদ্যাপন করতাম। রাসুল (সাঃ) বললেন, ‘আল্লাহ তোমাদের জন্য এ দুদিনের পরিবর্তে উত্তম দুটি দিন ধার্য করেছেন। একটি ঈদুল ফিতর অপরটি ঈদুল আজহা। (আবু দাউদ :১১৩৪)। ঈদুল ফিতর হচ্ছে নামাজ ও দান সদকার এবং ঈদুল আজহা হচ্ছে নামাজ ও কুরবানির। রাসুল (সাঃ) লোকদের ঈদের নামাজ আদায় করার আগেই ফিতরা দিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। (বুখারী : ১৫০৯)।
রমজান মাসের শেষে শাওয়াল মাসের এক তারিখে উদ্যাপিত হয় ঈদুল ফিতর। ফিতর শব্দের অর্থ ভাঙা বা শেষ করা। মহানবী (সাঃ) ঈদুল ফিতরের প্রত্যুষে ইফতার করতেন ঘুম থেকে উঠেই। রাসূল (সাঃ) ঈদুল ফিতরের দিন না খেয়ে ঘরে থেকে বের হতেন না। আর ঈদুল আজহার দিন ঈদের সালাত আদায় না করে কোনো কিছু খেতেন না। হজরত আনাস (রাঃ)  বলেন, ‘ঈদুল ফিতরের দিন রাসুল (সাঃ) খেজুর না খেয়ে ঈদগাহে রওয়ানা হতেন না আর খেজুর খেতেন বেজোড় সংখ্যায় অর্থাৎ তিনটি, পাঁচটি বা সাতটি এভাবে। (বুখারী : ৯৫৩)। প্রিয়নবী (সাঃ) ঈদের দিনের মিষ্টিমাখা ভোরে সুন্দরভাবে দাঁত পরিষ্কার ও গোসল করে নিতেন। সুগন্ধি মেখে বেরিয়ে পড়তেন নামাজের উদ্দেশ্যে। মহানবী (সাঃ) ঈদের দিন সুন্দর ও পরিষ্কার কাপড় পরিধান করতেন। সাহাবায়ে কেরামের আমলে রোজার মাসে এবং ঈদের পূর্বক্ষণে জিনিসপত্রের দাম থাকতো একদম কম। তারা মসজিদে টাকা নিয়ে বসে থাকতেন অভাবগ্রস্তের সন্ধানে। ভালো কাজে কে কত সম্পদ ত্যাগ করতে পারে, তারই ছিল প্রতিযোগিতা। ঈদের বাজারে তীব্র ক্রয় প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠা অর্থ ত্যাগ, স্বার্থ ত্যাগ আর আত্মত্যাগের পরিপন্থী। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত।
ঈদের দিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো, বড় জামাতে ঈদের নামাজ আদায় এবং খুতবা শ্রবণ করা। ঈদের জামাতে সকল শ্রেণীর লোক, সকল পেশার লোক, সকল অবস্থার লোক একত্রিত হয়। কেমন যেন সবাই সবার সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করি। খুতবার মাধ্যমে আমরা রাসুল (সাঃ)- এর সময়কার জীবনবোধের দ্বারা উজ্জীবিত হই। ঈদের জামাতের সাহায্যে একটি পরিশুদ্ধতা এবং পবিত্রতা প্রকাশের চেষ্টা করা হয়। আমাদের অস্তিত্ব সকলকে নিয়ে। সেই বিশ্বাসের কথা আমরা বিশ্বাস করি এবং সেই বিশ্বাসের দ্বারা উদ্বুদ্ধ হই। এ দিনের দাবি, অপর মুসলমানকে ক্ষমা করে দেয়া এবং পরস্পরকে ভাই হিসেবে গ্রহণ করা।
ঈদের দিন আত্মীয়-স্বজন এবং প্রতিবেশীদের বাড়িতে যাওয়া, তাদের খোঁজখবর নেয়া অবশ্য করণীয়। ঈদের দিনে পরস্পরের বাড়িতে যাওয়া এবং খাওয়া-দাওয়ার মাধ্যমে শত্রুতা হ্রাস পায় এবং সম্পর্ক দৃঢ়তর হয়। বাংলাদেশে ঈদের আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, শহুরেদের গ্রামের বাড়িতে যাওয়া। চাকরিজীবী, বুদ্ধিজীবী, ব্যবসায়ী যারা পেশাগত কারণে শহরে থাকেন, তাদের জন্যে ঈদে গ্রামে গিয়ে গ্রামের সমস্যা অবহিত হওয়ার একটি সুযোগ এনে দেয় এবং সমাধানের চেষ্টা করার ফুরসত পাওয়া যায়।
ঈদুল ফিতরের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, ফিতরা আদায় করা। কী পরিমাণ অর্থ সদকা বা ফিতরা দিতে হবে তার নির্দেশ কুরআন-হাদিসে রয়েছে। সুতরাং যার কাছে প্রয়োজনীয় সম্পদ ব্যতীত এ পরিমাণ ধনসম্পদ থাকে, যা থেকে জাকাত দেয়া ওয়াজিব। এমন ব্যক্তির জন্য সদকায় ফিতর আদায় করা ওয়াজিব। জাকাতের পরিমাণ হলো, ‘রুপা ৫৯৫ গ্রাম (৫২.৫০ ভরি) কিংবা স্বর্ণ ৮৫ গ্রাম (৭.৫০ ভরি) অথবা স্বর্ণ বা রুপা যে কোনো একটির নিসাবের মূল্য পরিমাণ অর্থসম্পদ বা ব্যবসায়িক সামগ্রীকে জাকাতের নিসাব বলে।’ সুতরাং কোনো ব্যক্তির কাছে মৌলিক প্রয়োজন পূরণের পর যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদ তার মালিকানায় থাকে এবং চান্দ্র মাসের হিসাবে ১ বছর তার মালিকানায় স্থায়ী থাকে, তাহলে তার ওপর এ সম্পদ থেকে ৪০ ভাগের এক ভাগ জাকাতরূপে প্রদান করা ফরজ। সদকায় ফিতর ও জাকাতের ভেতর সামান্য পার্থক্য রয়েছে। জাকাতের ক্ষেত্রে সম্পদ ‘মালে নামি’ অর্থাৎ বৃদ্ধি পায় এমন সম্পদ হতে হবে। কিন্তু ফিতরার ক্ষেত্রে এমনটি নয়। জাকাতের সম্পদ পূর্ণ ১ বছর অতিবাহিত হতে হয়; কিন্তু সদকাতুল ফিতর তাৎক্ষণিক ওয়াজিব হয়। উভয়ের ক্ষেত্রে সম্পদ ঋণ থেকে মুক্ত এবং প্রয়োজন অতিরিক্ত হতে হবে। (তাহতায়ি : ৩৯৪)। অপ্রাপ্ত শিশুর সদকায় ফিতর বাবার পক্ষ থেকে আদায় করা ওয়াজিব। আর যদি সন্তান নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়, তাহলে তার সম্পদ থেকে সদকায় ফিতর আদায় করতে হবে। এমনিভাবে পাগল সন্তানের সদকায় ফিতরের বিধানও। (ফতওয়ায় আলমগির : ১/১৯২)।  সন্তানের প্রাপ্ত বয়স হওয়ার পর বাবার পক্ষ থেকে সদকায় ফিতর আদায় করা ওয়াজিব নয়। তবে বাবা যদি সন্তানের পক্ষ হয়ে আদায় করে দেন, তাহলে তা আদায় হয়ে যাবে। তদ্রূপ স্বামী স্ত্রীর সদকায় ফিতর আদায় করেন, তাহলেও তা হয়ে যাবে। চাই এ বিষয়ে স্ত্রী থেকে অনুমতি নিক কিংবা তার অজান্তে হোক। (দুররে মুখতার : ৩/২৮৫)। তবে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সবকিছুই দান করার জন্য আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন।
ঈদের দিনের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো, ভালো রান্না এবং খাবারদাবার। এদিনে মিষ্টি খাওয়া এবং খাওয়ানো প্রিয় নবী (সাঃ)-এর সুন্নাত। রাসুল (সাঃ) ও সাহাবায় কেরাম নতুন খেজুর আর মিষ্টি হালুয়া খেতেন। কিন্তু আমরা ঈদ উৎসবকে পরিণত করেছি বিলাসের উৎসবে। এদিনে আমরা খাওয়ার নামে বাহুল্য খরচ করি, অপচয় করি, যা বাঞ্ছনীয় নয়। সকল আনন্দেই ভারসাম্য ও পরিমিত থাকবে, এটাই ইসলামের শিক্ষা। দুঃখের বিষয়; আমাদের ঈদ উৎসব এখন অনেক ক্ষেত্রে বিকৃত রূপ লাভ করেছে। আনন্দ উৎসব মুহূর্তে নিজেদের ব্যক্তিসত্তা হারিয়ে আমরা বিভিন্ন গর্হিত কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ছি। ত্যাগের উৎসব এখন পরিণত হয়েছে ভোগের উৎসবে। আমরা যেভাবে আনন্দ উৎসবে মত্ত হয়ে উল্লাসের প্রস্তুতি নিতে থাকি, তাতে মনে হয় এটি ঈদ উৎসব নয়, বরং কোনো বিজাতীয় উৎসব। অথচ এ সময়েও একজন মুমিনের উচিত আল্লাহকে স্মরণ করা। সীমালঙ্ঘন থেকে বিরত থাকা। প্রিয়নবী (সাঃ) ঈদের দিন বিশেষভাবে পাড়া-প্রতিবেশীর খোঁজখবর নিতেন, তাদের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ করতেন। ঈদের ময়দানে যে দান-সাদকা সংগৃহীত হত, তা তিনি ইনসাফ মত বণ্টন করে দিতেন গরীব-মিসকিনদের মধ্যে। তার সময়ে সর্বস্তরের মানুষই ছিলো ঈদের আনন্দে সমান অংশীদার।
সর্বোপরি কথা হলো, প্রত্যেক মুমিনের উচিত শরীয়তসম্মত তথা প্রিয়নবী (সাঃ) যেভাবে ঈদের উৎসব পালন করতেন সেভাবেই করা। কেননা, ঈদুল ফিতরের আনন্দ উৎসব ঐসব মুমিন লোকদের, যারা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি বিধানের জন্য মাসব্যাপী আহার বিহার আকাক্সক্ষা, আয়েশ আরামকে বিসর্জন দিয়েছেন। দিনে রোজার কঠোর সংযম পালন করে রাতের আঁধারে আবার দুহাত জোড় করে তারাবির নামাজে দ-ায়মান হয়েছেন। আরামের নিদ্রা ত্যাগ করে তাহাজ্জুদ পড়েছেন, সেহরি খেয়েছেন। মহান রাব্বুল আলামিনের খাতিরে সকল কু-অভ্যাস ত্যাগ করেছেন। আজ আল্লাহ তাদেরকে পুরস্কৃত করবেন। তাই আজ রোজা নিষিদ্ধ। আজ হলো সমাবর্তন উৎসব। তবে এ কথা প্রত্যেকের হৃদয়ঙ্গম করা উচিৎ যে আমাদের রোজা, ঈদ বা অন্যান্য ইসলামি পর্ব সাধারণ দুনিয়ার অন্য কোনো জাতির উৎসবের মত নয় বরং সমস্তটাই ইবাদত।
ঈদ মানুষের মনে প্রেম ও ভালোবাসা সৃষ্টি করে। পরস্পর বিচ্ছিন্ন হওয়া থেকে নিবৃত্ত করে মানুষকে মিলনের পথে আকর্ষণ করে। তাকে দানে উদারতায় প্রসারিত করে, তার অহংকারের ঊর্ধ্বগতিকে কমিয়ে তার শ্রেণীভেদের বা শ্রেণীবৈষম্যের দৃষ্টিকে সংযত করে। ঈদের শিক্ষা হলো, নিরহংকার হওয়া, প্রসারিত হওয়া, ত্যাগ ও দানের মহিমায় উত্তীর্ণ হওয়া। প্রিয়নবী (সাঃ)-এর সময়ে ঈদ-আনন্দে সর্বস্তরের সবাই ছিলো সমান অংশীদার। ঈদুল ফিতর আমাদের সমচেয়ে বড় জাতীয় আনন্দ উৎসব। এই উৎসবের অনাবিল আনন্দ সবার ঘরে পৌঁছে যাক, ঈদুল ফিতরের প্রাক্কালে এই কামনা করি। ঈদ মোবারক, ঈদ মোবারক!
লেখক : প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট।