• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

এসিল্যান্ডের প্রচেষ্টায় ১৯ লাখ টাকা পেলেন মতলবের মালা

প্রকাশ:  ০৮ জুন ২০২২, ০৯:২৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

১৭ বছর আগে কাজের সন্ধানে সৌদি আরবে পাড়ি জমান মালা আক্তার। ভেবেছিলেন প্রবাসে গেলে হয়তো ভালো কাজ পাবেন। জীবনমান হবে উন্নত। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, সৌদি আরবের রিয়াদে আব্দুর রহমান নামের একজনের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে যোগ দিয়ে টানা ১৭ বছর বিনা বেতনে কাজ করেছেন তিনি। মালা আক্তারের বাড়ি চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার বাগানবাড়ি ইউনিয়নের তালতলী গ্রামে। তিনি ওই এলাকার মৃত রাজ্জাক সরকারের মেয়ে। জানা গেছে, গৃহবন্দী হয়ে বিনা বেতনে কাজ করতে করতে হাঁপিয়ে উঠেছিলেন তিনি। তাই পাঁচ বছর আগ থেকে বাড়িতে আসার জন্য মুনিবকে জানালে তিনি মালাকে বাড়িতে আসতে না করেন। এভাবে ১৭ বছর পার করার পর মালাকে বাড়িতে আসার সম্মতি দেন মুনিব আব্দুর রহমান। কিন্তু তার সব পাওনা বুঝিয়ে দিতে রাজি হননি মালিক।

একপর্যায়ে মালা টাকার জন্য চাপ দিলে হিসাব দিতে বাধ্য হন আবদুর রহমান। মালার পাওনা ৮০ হাজার সৌদি রিয়াল দেবেন বলে তিনি মালাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেন চার মাস আগে। দেশে আসার পর মালা বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করলেও তার পাওনা টাকা বুঝে পাচ্ছিলেন না। তিন মাস আগে মালার বিষয়ে তথ্য নিতে আসে সৌদি আরবে বাংলাদেশ অ্যাম্বাসি থেকে খবর আসে মতলব উত্তর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. হেদায়েত উল্লাহর কাছে। তিনি বারবার সৌদি অ্যাম্বাসিতে যোগাযোগ করে মালার পাওনা টাকা বুঝিয়ে দেওয়ার দাবি জানান। একপর্যায়ে মঙ্গলবার (৭ জুন) মালার অ্যাকাউন্টে রেমিট্যান্স বোনাসসহ প্রায় সাড়ে ১৯ লাখ টাকা জমা হয়েছে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হেদায়েত উল্লাহর কাছে এসব তথ্য আসার পর তিনি মালা আক্তারকে তার কার্যালয়ে ডেকে পাঠান।

পরিশ্রমের টাকা পেয়ে আবেগাপ্লুত মালা আক্তার (৫২) সাংবাদিকদের বলেন, আমি অনেক চেষ্টা করছি টাকা পাওয়ার জন্য। সৌদি আরবে বাঙালিরা আমাকে সহযোগিতা করলে সহজেই টাকা পেয়ে যেতাম। অসহায় হয়ে দেশে চলে আসছি। দেশে এসেও অনেক যোগাযোগ করার পর কোনো পাত্তা পাইনি। অবশেষে এসি ল্যান্ড স্যারের চেষ্টায় আমি টাকা পেয়েছি। আমি এখন খুবই খুশি। স্যার অনেক ভালো মানুষ, আল্লাহ তার ভালো করবেন।

সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. হেদায়েত উল্লাহ বলেন, আমার কাছে সৌদি অ্যাম্বাসি থেকে কল আসার পর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মালাকে পাচ্ছিলাম না। পরে লোক মারফত তাকে পাই। সব পরীক্ষা করে মালার তথ্য অ্যাম্বাসিতে পাঠাই। তার পাওনা টাকা নিয়ে আমি লেগে ছিলাম। একটা পর্যায়ে টাকা পাওয়া নিয়ে সন্দিহান ছিলাম।

তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ ৬ জুন তাদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানায়, মালার টাকা পাঠানো হয়েছে। বহু চেষ্টার পর তার পরিশ্রমের টাকা পাওয়ায় আমি নিজেও আনন্দিত। হয়তো আমার প্রচেষ্টায় টাকাটা পেয়েছে, তবে এটা তার দীর্ঘ ১৭ বছরের প্রবাসজীবনের পারিশ্রমিক।

সর্বাধিক পঠিত