• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশের অভিযানে অশ্লীল ছবি ধারণ করে টাকা আদায় চক্রের ছয় সদস্য আটক

প্রকাশ:  ১২ মে ২০২১, ১২:২০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

পুলিশের হাতে ধরা পড়লো পতিতা ও তাদের দালাল চক্র। চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন ফ্ল্যাট বাড়িতে বাসা ভাড়া নিয়ে এই চক্রটি দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতারণা করে আসছিল। দালালরা শহরের বিভিন্ন স্থানে বিচরণ করে পুরুষদের টার্গেট করে নানা কথা বলে, আবার কখনো বাসায় ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী মেরামতের কথা বলে নিয়ে যেতো। বাসায় যাওয়ার কিছুক্ষণ পর কয়েকজন মেয়ে এসে জোরপূর্বক ওই লোকের সাথে অশ্লীল ছবি ধারণ করতো। এই ছবি ছড়িয়ে দেয়া হবে ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিতো। এমন প্রতারক চক্রের ছয় সদস্যকে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ আটক করেছে।
থানা সূত্রে জানা যায়, গতকাল ১১ মে চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাসলিমা আক্তার জেরিন (২০), স্বামী-শিহান পাটওয়ারী, সাং- ট্রাকঘাট, নাজমুল পাটওয়ারী বাড়ি, থানা ও জেলা- চাঁদপুর, সাদিয়া বেগম (২৭), পিতা-মৃত আব্দুল বারেক, মাতা- মনোয়ারা বেগম, সাং-বাঙ্গালখালিয়া, হাজী বাড়ি, থানা- রাঙ্গুনিয়া, জেলা-চট্টগ্রাম, হাসিনা বেগম প্রঃ মুন্নি (৩৫), মাতা- মৃত রোকেয়া বেগম, স্বামী- মিন্টু বেপারী, সাং-সকদি রামপুর, বেপারী বাড়ি, থানা-ফরিদগঞ্জ, জেলা-চাঁদপুর, মোস্তফা (৪৫), পিতা-মৃত ছেলামত মিজি, সাং-শোভান, মিজি বাড়ি, থানা-ফরিদগঞ্জ, জেলা-চাঁদপুর, কাজল খান (২২), পিতা- আরিফ খান, মাতা- জোসনা বেগম , সাং- প্রত্যাশি, খান বাড়ি, উত্তর গোবিন্দপুর, থানা-ফরিদগঞ্জ, জেলা-চাঁদপুর ও আয়েশা আক্তার নিপা (১৯), পিতা- সিরাজুল মোস্তফা, মাতা- নাসিমা বেগম, শিংগাইর, প্রধানিয়া বাড়ি, রাজারগাঁও, থানা-হাজীগঞ্জ, জেলা-চাঁদপুরকে গ্রেফতার করা হয়।
থানা পুলিশ জানায়, আটককৃতরা দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন লোকজনকে কৌশলে বাসায় ডেকে এনে অশ্লীল ছবি ধারণ করে অবৈধভাবে টাকা আদায় করতো। এ ধরনের একটি অপরাধের ভিত্তিতে মোঃ মাইনুল ইসলাম (৩৩) চাঁদপুর সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাইনুল ইসলামের দোকানের পাশে বিবাদী মোস্তফার হার্ডওয়্যারের দোকান আছে। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার সাথে মাইনুলের মনোমালিন্য হয়। উক্ত মনোমালিন্যের কারণে বিবাদী মোস্তফা ও জেরিন যোগসাজশে মাইনুল ইসলামের ক্ষতির অপচেষ্টায় লিপ্ত থাকে। গত ৭ মে সকাল ১০টায় মাইনুল ইসলাম চাঁদপুর শহরস্থ সেবা সিটি সেন্টারে এসির কাজ করার সময় তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর ০১৮৩৩-৬৪৬২১৯-এ মোবাইল নম্বর ০১৯৫১-৬২৭২৪৮ থেকে জেরিন ফোন করে মাইনুল ইসলাম কোথায় আছে জিজ্ঞাসা করে। মাইনুল ইসলাম তাকে চাঁদপুর শহরস্থ সেবা সিটি সেন্টারে আছি মর্মে জানান। তখন জেরিন মাইনুল ইসলামকে তার বাসার নষ্ট ফ্রিজ মেরামত করে দেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে অনুরোধ করে। এক পর্যায়ে ওইদিন দুপুর অনুমান ১টার সময় বিবাদী জেরিন ও সাদিয়া সেবা সিটি সেন্টারের সামনে গিয়ে মাইনুলকে তাদের সাথে ঘটনাস্থল শহরের আলিমপাড়াস্থ হাসিনা বেগমের ভাড়া বাসা ড্রিম হাউজের ৩য় তলার পূর্ব পাশের ইউনিটে নিয়ে যায়। সেখানে কিছুক্ষণ বাদীকে বসিয়ে রাখার পর দুপুর অনুমান দেড়টার সময় গ্রেফতারকৃত আসামীরা বাদী মাইনুল ইসলামকে পানি পান করার জন্যে বারবার বললে বাদী রোজা রাখায় পানি পান করতে অস্বীকার করেন। তখন ৫, ৬, ৭ ও ৮নং বিবাদীগণ ঘটনাস্থল বাসার ভেতরে প্রবেশ করে জোরপূর্বক বাদীর গায়ের শার্ট ও কোমরের বেল্ট খুলে আয়েশা আক্তার নিপার মোবাইলের মাধ্যেমে ভিডিও ধারণ করতে থাকে। এ সময় জেরিন আক্তার বলে যে, মাইনুল ইসলাম তার সাথে খারাপ কাজ করেছে, সে জন্য বিবাদীদের ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হবে। নতুবা ধারণকৃত ভিডিও বাদীর স্ত্রীর নিকট পাঠিয়ে পরিবারের অশান্তি সৃষ্টি করবে। তখন মাইনুল ইসলাম বিবাদীদের অনেক অনুরোধ করার পরও বিবাদীগণ টাকা ছাড়া বাদীকে ছাড়বে না বলে জানায় এবং বিবাদীগণ তাকে চড়-থাপ্পর মারতে থাকে। এক পর্যায়ে মাইনুল ইসলাম নিরূপায় হয়ে বিবাদীদের ভয়ে তাদের চাহিদামত চাঁদা বাবদ বাদীর প্যান্টের পকেটে থাকা নগদ ১০ হাজার টাকা জেরিনের হাতে দিলে বিবাদীগণ বাদীকে দরজা খুলে বাসা থেকে বের করে দেয়।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর থানার মামলা নং- ২৩,তাং- ১১/০৫/২০২১ইং ধারা-৩৪২/৩২৩/৩৮৫/৩৮৬/১০৯/৩৪ পেনাল কোড রুজু করে তদন্তভার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুজন কান্তি বড়ুয়ার উপর অর্পণ করলে তিনি এবং সঙ্গীয় ফোর্স ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে আসামীদের গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেন।

 

সর্বাধিক পঠিত