• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

পুলিশের দৃষ্টান্তযোগ্য বিরল সাফল্য

প্রকাশ:  ১৪ অক্টোবর ২০১৮, ০৮:৩৯
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

‘পুলিশ পারে না হেনো কোনো কাজ নেই।’ এ রকম একটি প্রবাদ আমাদের দেশে প্রচলিত বহুকাল ধরেই। এমন প্রচলিত বাক্যকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন হাজীগঞ্জ থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ আলমগীর হোসেন রনিসহ কয়েকজন উপ-পরিদর্শক। এক দম্পতি ভুলবশত সিএনজি স্কুটারে মূল্যবান সামগ্রী রেখে নেমে যাওয়ার প্রায় দুই মাস পর ঐ স্কুটার চালককে আটকসহ হারানো মালামাল উদ্ধার করে মালিকের হাতে তুলে দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ। এদিকে স্কুটার চালক নিতান্ত গরিব বিধায় তার বিরুদ্ধে কোনো আইনী ব্যবস্থা নেয়নি ঐ দম্পতি।  
    থানা সূত্রে জানা যায়, মতলব দক্ষিণ উপজেলার বাসিন্দা ও রাজধানীর তেজগাঁওয়ের বিএএফ শাহীন কলেজের লেকচারার শাহাদাত হোসেন স্ত্রীসহ সিএনজি স্কুটারযোগে চাঁদপুর থেকে হাজীগঞ্জের বলাখাল বাজারে নেমে দেখেন তার স্ত্রীর সাইড (ভ্যানিটি ব্যাগ) নেই। এর কয়েক মিনিট পরেই ঐ দম্পতি স্কুটারের খোঁজে বলাখাল থেকে হাজীগঞ্জ বাজার পর্যন্ত গিয়ে কোনো হদিস না পেয়ে হাজীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরই মধ্যে পুলিশ প্রযুক্তির ব্যবহার করে জানতে পারে ঐ শিক্ষকের স্ত্রীর মোবাইলটি খোয়া যাওয়ার প্রথম দিন চালু ছিলো। এর পরের দিন মোবাইলের সিমটি পরিবর্তন করে ব্যবহার শুরু করে অজ্ঞাত সেই স্কুটার চালক। এভাবেই একই মোবাইল খোলা রেখে বেশ কয়েকবার সিমের পরিবর্তন করে সেই স্কুটার চালক। সর্বশেষ গত শনিবার হাজীগঞ্জ থানা পুলিশ নারায়ণগঞ্জ থেকে স্কুটার চালককে ধরে আনে। স্কুটার চালকের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার শ^শুর বাড়ি থেকে পুলিশ সেই দম্পতির খোয়া যাওয়া ৬ ভরি স্বর্ণ বিক্রির ১ লাখ ১৯ হাজার টাকা, কসমেটিক্স ও ব্যাগটি উদ্ধার করে।
    মুঠোফোনে শিক্ষক শাহাদাত হোসেন চাঁদপুর কণ্ঠের কাছে পুরো ঘটনাসহ পুলিশের প্রশংসা করে বলেন, সিএনজি স্কুটারে রেখে যাওয়া ব্যাগে আমার স্ত্রীর ব্যবহৃত দামী মোবাইল, ৬ ভরি স্বর্ণ, দামী কসমেটিক্স ছিলো। ইতিমধ্যে স্কুটার চালক স্বর্ণ পুরোটা বিক্রি করে দিয়েছে। যার মধ্যে আমি ১ লাখ ১৯ হাজার টাকা, মোবাইল সেট ও বাকি জিনিসপত্রগুলো পেয়েছি। অপর এক প্রশ্নে এই শিক্ষক বলেন, আমি ঐ স্কুটার চালকের বাড়িতে গিয়ে দেখি, সে নিতান্তই গরীব আর গত ১৫ দিন পূর্বে তার একটি প্রতিবন্ধী সন্তান জন্মলাভ করেছে। মামলা করলে সে জেলে যাবে ঠিক আছে, হয়তো তার স্ত্রী সন্তান না খেয়ে থাকবে, আর তার বাড়ির ঘরের অবস্থা দেখে মনে হয়েছে, মামলা চালানোর ক্ষমতা ঐ স্কুটার চালকের নেই। তাই আমি মামলা করিনি।  
    এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আলমগীর হোসেন রনি চাঁদপুর কণ্ঠকে জানান, উপ-পরিদর্শক মাঈন উদ্দিন, আামির হোসেনের নিরলস প্রচেষ্টায় মালামাল উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আর সিএনজি স্কুটার চালক গরিব আর লোভে পড়ে এমন ঘটনা ঘটানোর কারণে শিক্ষক শাহাদাত হোসেন স্কুটার চালকের নামে মামলা করেননি।