• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির ষষ্ঠ বার্ষিক সাধারণ সভায় পুলিশ সুপার

চিকিৎসা নিতে আসা একজন রোগী ডাক্তারের কথাবার্তায় ও ভালো ব্যবহারে তার রোগের অনেকাংশ ভাল হয়ে যায়

প্রকাশ:  ১৯ এপ্রিল ২০১৯, ১৯:৩৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির ষষ্ঠ বার্ষিক সাধারণ সভা  ১৯ এপ্রিল শুক্রবার সকালে হাসপাতাল ভবনের অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির সহ-সভাপতি ও পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির, বিপিএম, পিপিএম। অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক মোহাম্মদ শওকত ওসমান (যুগ্ম-সচিব পদোন্নদিপ্রাপ্ত), চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতি পরিচালনা পর্ষদের সদস্য, পৌর সভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বিশিষ্ঠ চিকিৎসক, ফুড কেয়ার সার্জন ডাঃ জে. আর. ওয়াদুদ টিপু, সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) ডাঃ একেএম মাহবুবুর রহমান ও সমিতির যুগ্ম সম্পাদক অধ্যাপক ড. শায়ের গফুর। স্বাগত বক্তব্য বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন চাঁদপুর ডায়াবেটিক সমিতির অবৈতনিক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ মোঃ জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম।
সমিতির পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ও বার্ষিক সাধারণ সভা উদ্যাপন কমিটির আহ্বায়ক রোটাঃ কাজী শাহাদাত,  চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালের আইটি কর্মকর্তা উজ্জ্বল হোসাইন ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা (চ.দা.) মোঃ ইকবাল আজমের যৌথ সঞ্চালনায় সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন হাসপাতালের ইবাদত খানার পেশ ইমাম হাফেজ শাহজালাল প্রধানীয়া। এরপর শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন সমিতির সদস্য কাজী শাহাদাত। সমিতির যাঁরা মৃত্যুবরণ করেছেন পরিচালনা পর্ষদের সদস্য আবুল কালাম পাটওয়ারী, পরেশ চন্দ্র সাহা, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ ডাঃ এমএ গফুরের স্ত্রী প্রফেসর মাহমুদা খাতুন ও যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক হায়দার চৌধুরীর স্ত্রী সালমা চৌধুরীর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণ সম্পাদকের অনুমতিক্রমে পঞ্চম বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী পাঠ করেন হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (চ.দা.) মোঃ ইকবাল আজম। কোষাধ্যক্ষের অনুপস্থিতিতে সমিতির যুগ্ম সম্পাদক আলহাজ¦ মোস্তাক হায়দার চৌধুরী কর্তৃক অডিট রিপোর্ট ও ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয় এবং সর্বসম্মতিক্রমে উহা অনুমোদন করা হয়।
সভায় হাসপাতালের কর্তব্যনিষ্ঠা ও দায়িত্ববোধের জন্য তিনজন কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে অন্যতম সেরার সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। এবার সেরার সম্মাননা পেয়েছেন মেডিকেল অফিসার ডাঃ সানজিদা আলম, সমাজকল্যাণ  কর্মকর্তা হাসান কবির ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) সুমন চন্দ্র দাস। সভার সভাপতিসহ অন্যরা তাদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট তুলে দেন।
 উন্মুক্ত পর্বে আলোচনায় সভায় বার্ষিক প্রতিবেদন, বাজেট, অডিট রিপোর্ট এবং হাসপাতালের সার্বিক কর্মকা-ের ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সমিতির আজীবন সদস্য শহীদুল্লাহ মাস্টার, গোলাম কিবরিয়া জীবন, অ্যাডঃ কামাল উদ্দিন, মাহমুদা খানম, অ্যাডঃ সাইফুদ্দিন বাবু, গিয়াস উদ্দিন মিলন, অধ্যাপক জাকির হোসেন, মুজিবুর রহমান ফরহাদ, কাজী মোঃ ইব্রাহিম জুয়েল, শেখ মহিউদ্দিন রাসেল, লায়ন গোলাম হোসেন টিটু প্রমুখ।
সভা শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন পরিচালনা পর্ষদের সদস্য সুভাষ চন্দ্র রায়।
সভায় উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে উপস্থি ছিলেন পরিচালনা পর্ষদের সদস্য আলহাজ¦ অ্যাডঃ ফজলুল হক সরকার, আলহাজ¦ অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেন খান, ডাঃ সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, আলহাজ¦ এমএ বারী খান, মোঃ রোকনুজ্জামান রোকন, ডাঃ বিশ^নাথ পোদ্দার, তমাল কুমার ঘোষ, ডাঃ এসএম মোস্তাফিজুর রহমান, দাতা ও আজীবন সদস্য হাজী আবুল কাশেম গাজী, পরেশ মালাকার, আজীবন সদস, প্রফেসর মনোহর আলী, প্রকৌশলী মোঃ দেলোয়ার হোসেন, মোঃ মোশারফ হোসেন, অ্যাডঃ জাহিদুল ইসলাম রোমান, মোঃ জামাল হোসেন, সূর্য কুমার নাথ, মফিজ উদ্দিন সরকার, রহিমা বেগম অধ্যক্ষ ডাঃ মোজাম্মেল হক পাটওয়ারী, গোপাল সাহা, নাসির উদ্দিন খান, হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী, অ্যাডঃ পলাশ মজুমদার, চৌধুরী ইয়াসিন ইকরামসহ সমিতির দাতা সদস্য, আজীবন সদস্যসহ ও হাসপাতালের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
সভাপ্রধানের বক্তব্যে পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির, বিপিএম, পিপিএম বলেন, এখানে সেবার মান ভালো না থাকার কোন সুযোগ নেই। সেবার মান ভালো থাকবেই কারণ এ হাসপাতাল পরিচালনায় চাঁদপুওে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সুধীজন জড়িত আছে। সভায় যারা উপস্থিত আছেন তাদের দেখে মনে হচ্ছে না, শুধু চাঁদপুর ডায়বেটিক সমিতি ও হাসপাতাল পরিচালনা পর্ষদ। আমার কাছে মনে হয়, এটা চাঁদপুর জেলা পরিচালনা পর্ষদ। এখানে যারা আছেন, তাঁরা চাঁদপুরকে পরিচালনার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সুতরাং এ সমিতি তথা হাসপাতাল আরো ভাল সেবা প্রদান করবে এটা আমার প্রত্যাশা। এই সমিতি ও হাসপাতাল যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে এর সেবারমান আরও গতি পাবে এবং শুধু চাঁদপুর নয়, এ হাসপাতালের কার্যক্রম প্রশংসিত হবে সর্বমহলে।
তিনি ড. শায়ের গফুরকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, তিনি গর্বিত পিতার সন্তান। ডাঃ এমএ গফুর জমি দান না করলে হয়ত সেবার এই প্রতিষ্ঠানটি হতো না। তিনি আমাদের সমাজের জন্যে এ মহৎ কাজটি করেছেন। তাই তাঁর এ দান সারাজীবন স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
সমিতির সহ-সভাপতি ও পুলিশ সুপার আরো বলেন, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন। তিনি একটা কথা বলে গেছেন ডাক্তারদের আগে বড় মানুষ হওয়া প্রয়োজন। আমরা বড় ডাক্তার বা ডক্টরেট ডিগ্রিধারী হতে পারি, কিন্তু মানুষ হিসেবে ভালো না হলে সেটা হবে মূল্যহীন। চিকিৎসা নিতে আসা একজন রোগী ডাক্তারের কথাবার্তায় ও ভালো ব্যবহারে  তার রোগের অনেকাংশ ভাল হয়ে যায়। সে ধরণের আচরণ রোগীর সাথে করতে হবে। আর যারা ডায়াবেটিকে আক্রান্ত তারা তা প্রকাশ করতে চায় না। তারা মনে করে এটা সিরিয়াস কোন অসুখ। এ ক্ষেত্রে সবাইর মাঝে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। আমি মনে করি, চাঁদপুরে ডায়াবেটিক সমিতির যে ফ্লাটফর্ম গড়ে উঠেছে এর মাধ্যমে মানবসেবার অনেকগুলো থাপ এগিয়ে যাবে এবং সুন্দর চাঁদপুর হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শওকত ওসমান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ডায়াবেটিস হাসপাতাল পরিচালনার জন্য এই সমিতির বার্ষিক সাধারণ সভা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে অনেক সমস্যা চিহ্নিত হয় এবং যে প্রস্তাবনাগুলো থাকে তার মূল্যায়নের জন্যই কিন্তু এই বার্ষিক সাধারণ সভা। সভাগুলো যাতে নিয়মিত হয় এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। যতবেশি সভা করা হবে সমিতির গতিশীলতা ততো বাড়বে। তিনি আরো বলেন, সবার জন্য ভাল স্বাস্থ্য আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। সেই ক্ষেত্রে ডায়বেটিস আমাদের বড় একটা হুমকি এবং চ্যালেঞ্জ। যারা এই রোগে আক্রান্ত তাদের জন্য অ্যাকশান প্ল্রান দরকার। আগামিতে যাতে কেউ আক্রান্ত না হয়, সে বিষয়ে আমাদের সচেতনতা থাকতে হবে।
পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, বর্তমান সরকার সবগুলো ক্ষেত্রে সমান গুরুত্ব দিয়ে এই দেশকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দৌঁড়গোড়ায় পৌছে দিতে জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাস্থ্য সেবার উপর জোড় দিয়েছেন। ইনশাল্লাহ চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা আরো উন্নয়ন হবে। মানুষ এখানে যাতে ভালমানের চিকিৎসা চিকিৎসা পায় সে ব্যাপাওে আমাদের শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপির নজর রয়েছে। তিনি হাসপাতাল উন্নয়নে তিনি যে কোনো সহযোগিতা করবেন।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ মোঃ জাহাঙ্গীর আখন্দ সেলিম তাঁর বক্তব্যে বলেন, সরকারি সহযোগিতা, বিত্তবান, দানশীল ,মানবদরদী মানুষের সহায়তায় এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি। রোগীরা যাতে সর্বোত্তম সেবা লাভ করে সে ব্যাপারে আমরা আন্তরিক ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে যাচ্ছি। হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থার উপর জনগণের আস্থা বৃদ্ধির কারণে রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। ভবিষ্যতে এ ধারা রাখতে আমরা সর্বদা সচেষ্ট। হাসপাতালটি আরো সম্প্রসারণের জন্যে দ্বিতীয় পর্যায়ের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে  অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। এখানে অত্যাধুনিক একটি অ্যাম্বুলেন্স পাবার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। খুব দ্রুত এ হাসপাতালে চক্ষু ইউনিট চালু করা হবে। পর্যাক্রমে চিকিৎসা সেবার পরিধি বাড়ানো হবে।

 

সর্বাধিক পঠিত