• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

সাজাপ্রাপ্ত চার্জশীটভুক্ত আসামী প্রাথমিক শিক্ষক শহীদুল ইসলামকে চাকুরি থেকে বরখাস্তের দাবি স্ত্রী-সন্তানদের

প্রকাশ:  ০৬ জুন ২০২৩, ১১:৪৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

চাকুরির বিধান অনুযায়ী ১টি ফৌজদারি মামলার সাজাপ্রাপ্ত, গ্রেফতারকৃত ও আরেকটি মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামী বহু বিবাহে আসক্ত চাঁদপুর সদর উপজেলাধীন ২৩নং পাইকাস্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামকে চাকুরি থেকে বরখাস্তের দাবি জানিয়েছেন তারই বিবাহিত স্ত্রী ও সন্তানগণ। তার স্ত্রী রেহানা ইয়াসমিন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর এক আবেদনে ফৌজদারি মোকদ্দমা সিআর ২২/২০২২-এর বিগত ২২/০৫/২০২৩ খ্রিঃ তারিখে সাজাপ্রাপ্ত আসামী এবং নারী ও শিশু নির্যাতন মোকদ্দমা নং-৮০/২০২২ খ্রিঃ-এর চার্জশীটভুক্ত আসামী মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামকে আইন ও ইকুইটি অনুযায়ী চাকুরি থেকে বরখাস্তের আবেদন জানান।
সাংসারিক জীবনে স্বামীর অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার প্রাথমিক শিক্ষিকা রেহানা ইয়াসমিন। বিগত ২০০২ সালে আলীগঞ্জ পিটিআইতে ট্রেনিং করতে গিয়ে পরস্পর পরস্পরকে পছন্দ করে বিগত ০৮/১০/২০০২ খ্রিঃ তারিখে ইসলামী শরীয়তের বিধানমতে রেজিঃকৃত কাবিননামা মূলে চাঁদপুর সদর আশিকাটি ইউনিয়নের উত্তর পাইকাস্তা গ্রামের মৃত হাবিব উল্লার তৃতীয় সন্তান প্রাইমারী শিক্ষক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামের সাথে রেহানা ইয়াসমিন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। দাম্পত্য জীবন চলাকালীন মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামের ঔরসে ৭ জন সন্তান আসলেও ৫ জন সন্তানকেই স্বামীর চাপের কাছে নতি শিকার করে অ্যাবরশনের মাধ্যমে নষ্ট করে ফেলতে বাধ্য হন। স্বামীর ভালোবাসা পেতে বলি দিতে হয় নিজের মাতৃত্বকে। কিন্তু এতো ত্যাগ শিকার করেও সাংসারিক জীবনে স্বামীর ভালোবাসার বদলে তার জীবনে নেমে আসে অমাবস্যার রাত। স্বামীর একের পর এক           অত্যাচার-নির্যাতনের শিকারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়ে রেহানা ইয়াসমিন। এমনকি গত ৬/১১/২০২১ খ্রিঃ তারিখে তাকে হত্যারও চেষ্টা করা হয়। এতো কিছুর পরও রেহানা ইয়াসমিন নীরবে সব সহ্য করে আসছিলেন। কিন্তু স্বামীর অত্যাচার বেড়েই চলে। বিভিন্ন সময় যৌতুক দাবি করে তার ওপর চলে নতুন নতুন নির্যাতন। স্বামীর ধারাবাহিক নির্যাতনের এক পর্যায়ে রেহানা ইয়াসমিন মানসিক ও শারীরিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। স্বামীর অত্যাচার সইতে না পেরে তিনি ২৩/১১/২০২১ খ্রিঃ তারিখে বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল (চাঁদপুর)-এ মামলা করেন। যার নং-৪১৮ / ২০২১। তদন্ত কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম চার্জশিটভুক্ত হয়ে নারী ও শিশু মোকদ্দমা নং- ৮০/২০২২-এ রেজিঃভুক্ত হয়। উক্ত মোকদ্দমায় বিগত ১৬/০২/২০২২ খ্রিঃ তারিখে শহীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু হয় এবং সে অস্থায়ী জামিন লাভ করেন। অদ্যাবধি সে অস্থায়ী জামিনে আছে (১ বছর ৩ মাস)। সার্ভিস রুল অনুযায়ী তার অস্থায়ী জামিন কারাবরণেরই শামিল। এতদসত্ত্বেও শহীদুল ইসলাম তার কৃতকর্মে অনুতপ্ত না হয়ে তার চারিত্রিক লাম্পট্য, পরকীয়া এবং আমার ও আমার সন্তান মোঃ মাহি হাসান, মেহেরুন মহিনীর উপর ধারাবাহিক নির্যাতন, নিপীড়ন অব্যাহত রাখে। এমনকি তাদেরকে প্রাণে মেরে ফেলারও চেষ্টা করে, যা তার স্ত্রী রেহানা ইয়াসমিন তার আর্জিতে জানান। সে বেআইনিভাবে তার স্ত্রীর অনুমতি ব্যতীত একাধিক বিয়ে করারও প্রমাণ সংগ্রহ করতে সক্ষম হন প্রথম স্ত্রী রেহানা বেগম। এমনিভাবে স্বামী শহীদুলের নানা অত্যচারে অতিষ্ঠ হয়ে নিরূপায় রেহানা ইয়াসমিন গত ০৪/০১/২০২২ খ্রিঃ তারিখে চাঁদপুর বিজ্ঞ আমলী আদালতে স্বামী শহীদুলের বিরুদ্ধে সিআর মোকদ্দমা করেন। যার নং-২২/২০২২। উক্ত মামালার রায়ে শহীদুলের ৪ মাস সশ্রম কারাদণ্ড, ১ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। যেহেতু সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮-এর বিধি, ১৩-এর উপবিধি (০১) অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্তের আদেশের অনুবৃত্তিক্রমে বাধ্যতামূলক অবসরের বিধান রয়েছে। সেহেতু উক্ত আইন ও ইকুইটি অনুযায়ী ২টি ফৌজদারি মামলার সাজাপ্রাপ্ত ও চার্জশীটভুক্ত আসামী প্রাথমিক শিক্ষক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামকে তার চাকুরি হতে বাধ্যতামূলক অবসরের আদেশ দানের জন্যে তার স্ত্রী ও সন্তানেরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারসহ প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন। কোনো অদৃশ্য শক্তির বলে শহীদুল ইসলাম একের পর এক অন্যায় ও ফৌজদারি মামলার সাজাপ্রাপ্ত, চার্জশীটভুক্ত আসামী হওয়া সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত জাতি গঠনে নিবেদিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মত একটি পবিত্র প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন সেটি তার স্ত্রী রেহানা ইয়াসমিন ও তার সন্তানদের বোধগম্য হচ্ছে না। তারা অবিলম্বে সরকারি কর্মচারি (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা ২০১৮-এর বিধি ১৩-এর উপবিধি (০১) অনুযায়ী শহীদুলকে সরকারি চাকুরি থেকে বরখাস্ত করার দাবি জানান।