• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • রোববার, ১২ মে ২০২৪, ২৯ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে সনাকের মতবিনিময়

জনবল সঙ্কট সত্ত্বেও নিষ্ঠার সাথে সেবা প্রদান করে যাচ্ছি : তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ আনোয়ারুল আজিম

প্রকাশ:  ৩০ জুলাই ২০১৯, ০৯:৩৫
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

‘স্বাস্থ্য খাতে চাই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা’ এই শ্লোগান নিয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে গতকাল ২৯ জুলাই ২০১৯ সনাকের মতবিনিময় সভা দুপুর ১টায় তত্ত্বাবধায়ক-এর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সনাকের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়–য়া। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোঃ আনোয়ারুল আজিম।  
প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলেন, হাসপাতালে জনবল সঙ্কট প্রকট। জনবল সঙ্কট হলেও আমার সহকর্মীরা সেবা প্রদানে আন্তুরিক। প্রতিটি বিভাগেই রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু পর্যাপ্ত লোকবল নেই। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আউটসোর্সিং থেকে লোক এনে হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। তিনি আরও বলেন, জনবল সঙ্কট থাকা সত্ত্বেও অত্যন্ত নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সাথে সেবা প্রদান করে যাচ্ছি। তিনি সভার সিদ্ধান্তের আলোকে অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন। তিনি জানান, ইতিমধ্যে মেয়র মহোদয়ের সহযোগিতায় হাসপাতালের পানির সংকট সমাধান হয়েছে। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা নিশ্চিত করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরাতে কিছু অনিয়ম হচ্ছে। যা ইতিমধ্যে আমার নজরে এসেছে। আমি এ ব্যাপারে অনিয়মের সাথে জড়িতদের সতর্ক করে দিয়েছি। তিনি বলেন, হাসপাতালের সেবার মান বৃদ্ধিতে সনাকের সহযোগিতা কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণকরি। তিনি আরও জানান, ইতিমধ্যে ইসিজি মেশিন ঠিক করা হয়েছে। তবে হাসপাতালের নিরাপত্তার জন্যে আনসার নিয়োগের ব্যাপারে সনাকের সহযোগিতা কামনা করছি। তিনি বলেন, সরকারিভাবে যদিও কোনো তথ্য কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়নি। তারপরও হাসপাতালে একজন তথ্য কর্মকর্তা রয়েছে। আমি যতক্ষণ অফিসে থাকি ততক্ষণ পর্যন্ত তথ্য সেবা নিতে আসা সকল সেবা গ্রহিতাকে সরাসরি সেবা দিয়ে থাকি। তিনি হাসপাতালের তথ্য সেবা কার্যক্রমকে আরও সমৃদ্ধ করার জন্যে সনাকের সহযোগিতা কামনা করেন। হাসপাতালের সেবা সংক্রান্ত বিষয়ে একটি অ্যাপস্ তৈরির প্রস্তাব আসলে তিনি জানান, প্রস্তাবটা সুন্দর। তবে আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। অ্যাপস তৈরির চেষ্টা করা হবে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক। ডেঙ্গু আক্রান্ত ৫৪ জন রোগী এ পর্যন্ত হাসপাতাল থেকে সেবা নিয়েছে। ২১ জন রোগী বর্তমানে ভর্তি আছে। তিনি ডেঙ্গু জ¦র বিষয়ে সবাইকে আতঙ্কগ্রস্ত না হওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। জ¦র হলেই তা ডেঙ্গু তা ভাবা ঠিক নয়। সনাক-টিআইবি যেভাবে মাঝেমধ্যে হাসপাতালে এসে সেবার মানোন্নয়নে কর্তৃপক্ষের সাথে সভা করে বিভিন্ন সমস্যা ও পরামর্শ দিয়ে থাকেন এজন্য তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় হাসপাতালের সেবার মান আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
    সনাকের সাবেক সভাপতি ও সদস্য কাজী শাহাদাত বলেন, হাসপাতালের সেবার মান আগের তুলনায় অনেক ভালো। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে কর্মক্ষেত্রে উপস্থিতি নিশ্চিত করা একটি ভালো উদ্যোগ। তবে এক্ষেত্রে যেন কেউ কোনো অনিয়ম না করতে পারে সেজন্যে তিনি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তিনি বলেন, হাসপাতালে জনবল সঙ্কট, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করাসহ যে কোনো সমস্যা নিয়ে কমিউনিটি সাপোর্ট কমিটির সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সনাক প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে। তিনি বলেন, এই হাসপাতালটি জনবান্ধব হাসপাতালে পরিণত হবে এটাই আমরা প্রত্যাশা করছি।
    সভাপতির বক্তব্যে সনাকের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ-কমিটির আহ্বায়ক ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়–য়া বলেন, আলোচনার মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান সম্ভব। যে কোনো সমস্যা সমাধানের জন্যে উভয় পক্ষেরই সহযোগিতা দরকার। হাসপাতালটি হলো একটি রেস্টুরেন্টের চুলার মতো। হাসপাতালের সেবার মান দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে বলেই দৈনিক শত শত রোগী এই হাসপাতাল থেকে সেবা নিতে আসে। তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমাদের সচেতন হতে হবে। সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, হাসপাতালের সেবাসংক্রান্ত বিষয়ে একটি অ্যাপস তৈরি করতে পারলে হাসপাতাল সম্পর্কিত যেকোনো তথ্য মানুষ ঘরে বসেই জানতে পারবে। সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় হাসপাতালের সেবার মান আরও বৃদ্ধি করতে হবে। তিনি মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
    টিআইবির এরিয়া ম্যানেজার মোঃ মাসুদ রানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সনাকের সাবেক সভাপতি ও সদস্য কাজী শাহাদাত। সভায় বিগত সভার কার্যবিবরণী পাঠকরা হয় এবং সুপারিশগুলো পর্যালোচনা করা হয়। হাসপাতালের তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থা বিষয়ক পর্যালোচনা যেমন : ঔষধ সরবরাহের প্রতিদিনের অবস্থা হালনাগাদ রাখা (দৃশ্যমান), তথ্য ও পরামর্শ বক্স বাস্তবায়ন, তথ্য প্রাপ্তির আবেদন নিষ্পত্তি ও তথ্য প্রদান রেজিস্ট্রার হালনাগাদকরণ, হাসপাতালের তথ্য কেন্দ্রের কার্যকারিতা বৃদ্ধি, এআই ডেস্ক চলাকালে সময়ে হাসপাতালের কেন্দ্রীয় সাউন্ড সিস্টেম-এর ব্যবহার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। হাসপাতালের ঘাটতিসমূহ চিহ্নিতকরণ ও করণীয় সম্পর্কিত পর্যালোচনা যেমন : প্রত্যাশিত জনবল, নিরাপদ পানি সরবরাহ, হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সেবাদাতাগণের জন্য পরিচিতি কার্ডের দৃশ্য মানবাস্তবায়ন, নারী সেবা/নারীবান্ধব সেবা বাস্তবায়ন ও ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেলটিকে (ওসিসি) দৃশ্যমান করা বিষয়ে আলোচনা করা হয়। মতবিনিময় সভায় নার্সিং সুপারভাইজার ও সেবিকাবৃন্দ, প্রধান সহকারী মোঃ সফিউল আলমসহ হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, ইয়েস ফ্রেন্ডস গ্রুপের সদস্যবৃন্দ ও টিআইবিকর্মীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
        

 

সর্বাধিক পঠিত