• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন দীর্ঘসূত্রী হচ্ছে: বিএনপি

প্রকাশ:  ০২ অক্টোবর ২০১৭, ২০:৪০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

‘যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে দীর্ঘসূত্রতার দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করছে বিএনপি। সোমবার ঢাকায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে বৈঠকে ‘যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠনের পর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই প্রতিক্রিয়া জানান।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এ বিষয়টি (জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ) একদম একটি অনিশ্চিত বিষয়। এই বিষয়টি এটাই প্রমাণ করছে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান অতি দ্রুত করতে সরকার ব্যর্থ হচ্ছে।

রাখাইনে সহিংসতা শুরুর পর গত এক মাসে ৫ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসার পর তা নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুমুল আলোচনা চলছে। এর আগে থেকে বাংলাদেশে শরণার্থী হয়ে আছে আরও ৪ লাখের বেশি রোহিঙ্গা।

এবার সমালোচনার মুখে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি যাচাই সাপেক্ষে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ঘোষণা দেন। এরপর তার দপ্তরের মন্ত্রী কিয়া তিন্ত সোয়ে সোমবার ঢাকায় আসেন। মিয়ানমারের মন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী ‘যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ’ গঠনের সিদ্ধান্ত সাংবাদিকদের জানান। সেগুন বাগিচায় কচিকাঁচার মেলা মিলনায়তনে জাসাসের উদ্যোগে রোহিঙ্গাদের নিয়ে ‘আলোকচিত্র ও প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শনী’তে তার প্রতিক্রিয়া জানান বিএনপি মহাসচিব।

চলচ্চিত্র নির্মাতা গাজী মাজহারুল আনোয়ারের পরিচালনায় ও অভিনেতা আশরাফউদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বলের ব্যবস্থাপনায় ভিন্নধর্মী এই অনুষ্ঠানে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের দুর্দশার চিত্র তুলে ধরা হয়।

অনুষ্ঠানে জাসাস সভাপতি অধ্যাপক মামুন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক হেলাল খান, সহসভাপতি মনিরুজ্জামান মুনির, শায়রুল কবির খান, মীর সানাউল হক, জাহাঙ্গীর আলম রিপন, শায়রিয়ার ইসলাম শায়লা, হাসান চৌধুরী, জাকির হোসেন রোকন, চৌধুরী আহজার আলী বিএনপি মহাসচিবকে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখান।

অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গাদের নিয়ে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা ‘ওরা এখন মানুষ নয়, শুধুই রোহিঙ্গা’ গানটি পরিবেশন করেন তার মেয়ে দিঠি আনোয়ার। এর সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন আহমেদ কিসলু। অনুষ্ঠানে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের লেখা কবিতা ‘অবাক হয়ে ভাবি’ পড়ে শোনান বিএনপি মহাসচিব।

ফখরুল বলেন, একটি জাতিকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করতে কী ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে, যে কোনো মানুষ সেই দৃশ্য দেখলে স্থির থাকতে পারবে না। মনুষ্যত্বের এই অবমাননা আজকে বিশ্ব রাজনীতিতে দেখা যায় না। রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের মাত্রা বিশ্ববাসীর কাছে উপস্থাপনে বাংলাদেশ সরকার ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

বলেন, এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য আমরা বরাবর বলে আসছি একটা জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার জন্য। দুর্ভাগ্য যে, এখন পর্যন্ত এই সরকার এটা করছে না। তাদের নীতি হচ্ছে জাতিকে বিভক্ত করে রাখা, জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে না দেওয়া।

কূটনৈতিক তৎপরতার প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত দেখিনি বাংলাদেশ থেকে কোনো উচ্চ পর্যায়ের দল আলোচনা করার জন্য এই দেশগুলোতে গেছে। আমরা বরাবরই বলে এসেছি এখন এই মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীরই সফর করা উচিৎ বা উচ্চ পর্যায়ের সরকারি মন্ত্রীসহ তাদের যাওয়া উচিৎ এবং এই দেশগুলোকে বোঝানো উচিৎ।

রোহিঙ্গা সঙ্কট অবসানে মিয়ানমারকে চাপ দিতে চীন, ভারতকে পাশে রাখতে কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদারের পরামর্শ দিয়ে আসছে বিএনপি।

ফখরুল বলেন, অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে, লক্ষ লক্ষ মানুষ অসহায় হয়ে গেছে, হাজার হাজার মানুষের প্রাণ চলে গেছে, হাজার হাজার শিশু তাদের অধিকার ফিরে পাচ্ছে না। আসুন মিয়ানমারকে বাধ্য করি, তাদের ফিরিয়ে নিতে।

সর্বাধিক পঠিত