• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ছিন্নমূল চাঁন মিয়ার পুনর্বাসনে চায়ের দোকান মিললো সরকারি অর্থায়নে

প্রকাশ:  ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২:৫৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 চাঁন মিয়ার (৫৫) বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের সাখুয়া গ্রামে। নদী ভাঙনের শিকার হয়ে সহায় সম্পত্তি সবকিছু হারিয়ে ছিন্নমূল হয়ে পড়েন। তার জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। এলাকায় রিকশা চালিয়ে চলত তার সংসার। পরে মৈশাদী এলাকার একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলের ভ্যান চালকের কাজ নেন। সাখুয়া গ্রাম ছেড়ে শেখেরহাট এলাকায় বসবাস করতেন।
কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস একবার তার ভ্যান গাড়ির সাথে সিএনজি চালিত স্কুটারের সংঘর্ষে হলে ওই দুর্ঘটনায় তার হাত পা ভেঙ্গে যায়। এরপর থেকে কাজ করতে না পেরে খুবই অসহায় হয়ে পড়েন চাঁন মিয়া। কিন্তু তিনি ভিক্ষাবৃত্তি না করে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের বারান্দায় সরকারি সহযোগিতার জন্যে দিনের পর দিন ঘুরছিলেন। বিষয়টি নজরে আসে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের। তিনি চাঁন মিয়ার অসহায়ত্বের বিষয়টি তদন্ত করে চাঁদপুর সদরের শেখেরহাট সরকারি আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকায় প্রশাসনের অর্থয়নে একটি চা দোকানের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সড়ক দুর্ঘটনায় পা ভেঙ্গে যাওয়া অসহায় ও ছিন্নমূল চাঁন মিয়ার এখন বেঁচে থাকার স্বপ্ন এই দোকান।
গতকাল রোববার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শেখেরহাট এলাকায় পুনর্বাসনের দোকানটি আনুষ্ঠানিকভাবে ফিতা কেটে উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইমতিয়াজ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দাউদ হোসেন চৌধুরী, (শিক্ষা ও আইসিটি) মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন সারোয়ার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজসহ অন্যান্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
বেঁচে থাকার সংগ্রামী জীবনে দোকান পেয়ে খুবই খুশি অসহায় চাঁন মিয়া। এজন্যে তিনি জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, অসহায় চান মিয়া গত ৩ মাস সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে বসে থাকত। তার একটাই দাবি ছিল আমি ভিক্ষা কিংবা করোর উপর নির্ভরশীল হতে চাই না। আমাকে একটি ছোট দোকান করে দেন। যাতে সেখানে দোকান করে বেঁচে থাকতে পারি। কারণ আমাকে দেখারমত কেউ নেই। এরপর আমরা তাকে বলেছি, তোমার ঘর না থাকলে ঘরে দেই। সে বলেছে আমার ঘর আছে দোকানই প্রয়োজন। তিন মাস অপেক্ষা করেছে সিদ্ধান্ত পাল্টায়নি। এরপর একজন ম্যাজিস্ট্রেট গিয়ে তার অবস্থান দেখে জানালো খুবই করুণ অবস্থা। এরপর আমরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার দোকান এবং মালামালও ক্রয় করে দিয়েছি। আজকে থেকে সে দোকান শুরু করতে পারবে এবং সে চলতে পারবে।

 

সর্বাধিক পঠিত