• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

জলবায়ুর প্রভাবে ৫০ বছরের মধ্যে চাঁদপুর সাগরের অংশ হবে

প্রকাশ:  ২২ মে ২০২৩, ১০:১৩
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

জলবায়ু পরিবর্তনে প্রভাবে ৫০ বছরের মধ্যে চাঁদপুর সাগরের অংশ হবে। এছাড়া বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনা, ভোলাসহ উপকূলীয় জেলাগুলো সমুদ্রের লোনা পানিতে নিমজ্জিত হবে। যা কৃষি ও মৎস্য চাষসহ জীবিকা নিরাপত্তায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে জানিয়েছেন পানি সম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ ড. আইনুন নিশাত।
শনিবার (২০ মে) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএফডিসি) ‘দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস করে ক্ষয়ক্ষতি কমানো’ শীর্ষক এক ছায়া সংসদে তিনি এসব কথা বলেন। প্রতিযোগিতাটি আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি। ছায়া সংসদে চাঁদপুর সরকারি কলেজকে পরাজিত করে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন হয়।
ড. আইনুন নিশাত বলেন, বাংলাদেশে জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বছরে ১০০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন হবে। ইতোমধ্যে ৭০ বিলিয়ন ডলার সহযোগিতার আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। তবে এই অর্থ ব্যবহারে আমাদের দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মোখার প্রভাবে সেন্টমার্টিন ডুবে যাবে বলে যে শংকা প্রচার হয়েছিলো তার গতিপ্রবাহ সম্পর্কে বিশদ ব্যাখ্যা না দেয়ায় কিছুটা বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়ার সতর্ক সংকেত দুর্বোধ্য ভাষায় দেয়া হয় বিধায় তা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারে না। এই সতর্কসংকেত মূলত নদীবন্দরকেন্দ্রিক। আবহাওয়ার কয়েকটি আগাম সংকেত প্রায় একই ধরনের, যা জনমনে সংশয় তৈরি করে। নদী ভাঙ্গন রোধে যেসব প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, সেগুলো বাস্তবায়নে সচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবে দুর্নীতি হচ্ছে। ভাঙ্গন রোধে জিওব্যাগ ব্যবহারের পরিবর্তে কংক্রিট ও পাথর ব্যবহার করা হলে তা দীর্ঘস্থায়ী ও টেকসই হবে।
সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, গত এক দশকে বাংলাদেশ দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে সফলতা অর্জন করলেও দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ উদ্বেগজনক। এখনো দুর্যোগ ঝুঁকির ব্যাপক শঙ্কা নিয়ে উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় বসবাস করছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত কারণে বাস্তুচ্যুত হয়ে অনেক মানুষ শহরে ভিড় করছে। বাস্তুচ্যুত গৃহহীন এসব মানুষকে এখনও পুরোপুরি সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। বজ্রপাত নিরসনে তালগাছ রোপণ কর্মসূচিতে যে অনিয়ম, দুর্নীতি ও সরকারি অর্থের অপচয় হয়েছে তার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়নি। ২০১৭ সালে সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢল ও অতি বৃষ্টিতে বাঁধ ভেঙে ১৫৪টি হাওড়ের ফসল তলিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত রাঘব বোয়ালরাও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। প্রায় দেড় দশক আগে ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় সিডর ও আইলায় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন ও বাঁধ নির্মাণের দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত কাউকে শনাক্ত করে শাস্তির আওতায় আনা যায়নি। ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে টিআর, কাবিখা, খাবিকা প্রকল্পগুলোকে মাঠ পর্যায়ে অনিয়ম ও দুর্নীতিমুক্ত করা সম্ভব হয়নি। দুর্যোগে ঝুঁকি হ্রাসে যে পরিমাণে বৈদেশিক সাহায্য আসে তার সুবিধা দুর্যোগকবলিত মানুষ পুরোপুরি পায় না।
তিনি বলেন, সর্বশেষ ঘূর্ণিঝড় মোখায় দেশে কোনো প্রাণহানি না ঘটলেও সেন্টমার্টিন, টেকনাফসহ কয়েকটি স্থানে ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মোখার কারণে কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতসহ চট্টগ্রাম, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ফেনী, নোয়াখালীসহ ১২টি উপকূলীয় জেলায় ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু এই মহাবিপদ সংকেতের মধ্যে অনেক জেলায় বড় কোনো দমকা হাওয়া, এমনকি মহাবিপদ সংকেতপ্রবণ এলাকার কোথাও কোথাও কোনো বৃষ্টিপাতও পরিলক্ষিত হয়নি। তাই মোখার কারণে ঘোষিত মহাবিপদ সংকেত অতিরঞ্জিত পূর্বাভাস ছিলো কি না তা নিয়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে। দুর্যোগের ঝুঁকি হ্রাসে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ ১০ দফা সুপারিশ করেন।
ছায়া সংসদ প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, উন্নয়ন কর্মী তানজিনা শরমিন, ড. এসএম মোর্শেদ, সাংবাদিক পারভেজ রেজা ও সাংবাদিক আঙ্গুর নাহার মন্টি। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়। সূত্র : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম।

 

সর্বাধিক পঠিত