ভরা মৌসুমেও দাম কমছে না ইলিশের
![](/assets/news_photos/2023/08/20/image-33035-1692503040.jpg)
![](https://www.chandpurpost.com/templates/web-v1/images/icon_print_new.png?v=1.1)
চাঁদপুরের রূপালি ইলিশ মাছ, তার স্বাদ, আকৃতি এবং দাম বাংলাদেশে নিয়মিত আলোচনার বিষয়। ক্রেতারা বলছেন, এই প্রিয় মাছটি আগের চেয়ে বেশ চড়া দামে কিনতে হচ্ছে। চাঁদপুর ইলিশ অবতরণ কেন্দ্র বড়স্টেশন মাছঘাটে গত ক’দিন যাবত প্রচুর ইলিশের আমদানি বেড়েছে।
শনিবার (১৯ আগস্ট) চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাটের আড়ত ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, ভরা মৌসুমেও আকার ও মানভেদে প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০ থেকে ১০০০/১২০০ টাকায়। স্থানীয় নদীর ইলিশ হলে ১৫শ’ থেকে ১৭শ’ টাকা কেজি। আড়তে এবং বাজারে প্রচুর ইলিশ পাওয়া গেলেও চড়া দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। তাই সাধ থাকলেও সাধ্যের কারণে মাছটির স্বাদ নিতে পারছেন না সাধারণ ক্রেতারা।
দূর-দূরান্ত থেকে আগত একাধিক ক্রেতা বলছেন, বাজারে এক কেজি ওজনের মাছের যা দাম দেখি তাতে কেনার সাহস হয় না।
জানা যায়, ইলিশের ভরা মৌসুম জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাস। পাঁচশ’ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ এই আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে ৯০০ টাকা থেকে ১০০০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে। গত বছর একই সময় একই আকৃতির ইলিশের দাম ছিলো সাড়ে ছয়শ’ থেকে সাড়ে সাতশ’ টাকা। এমন তথ্য দিচ্ছে ইলিশ কিনতে আসা ক্রেতা সাধারণ। বারশ’ থেকে চৌদ্দশ’ টাকার বেশি পড়ছে এক কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশের দাম।
সরেজমিনে ঘাটের আড়তগুলো ঘুরে দেখা যায়, হাজী মালেক খন্দকার, হাজী বাবুল হাজী, গফুর জমাদার, ছোট সিরাজসহ অন্য আড়তগুলোতে ইলিশের স্তূপ। ইলিশ-সংশ্লিষ্ট শত শত মানুষ কেনাবেচা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গত দুদিনে ৮ থেকে ১০টি ইলিশ-বোঝাই ফিশিং বোট ও ৫/৭টি পিকআপ ভর্তি হয়ে আসায় বড়স্টেশন মাছঘাট ইলিশে সয়লাব। প্রায় ৫ হাজার মণ ইলিশের আমদানি হয়েছে বলে জানান চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজী শবে বরাত সরকার।
তিনি বলেন, ইলিশ ধরা পড়ার অনুকূল পরিবেশ জো, বাতাস ও বৃষ্টি ছিলো বলে সাগর উপকূলীয় এলাকায় প্রচুর ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে। আমাদের ব্যবসায়িক লেনদেন থাকায় ভালো দামের আশায় বৃহত্তর নোয়াখালীর হাতিয়া, রামগতি, আলেকজান্ডার ও লক্ষ্মীপুর এলাকা থেকে এসব ইলিশ আসায় দামও কেজিতে দুই-তিনশ’ টাকা কমেছে। ইলিশের এমন আমদানি আরো ক’দিন থাকলে দাম আরো কমবে। স্থানীয় নদীতে ইলিশ কম পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ওই মৎস্য ব্যবসায়ী নেতা।
আলী আকবর নামে ঘাটের একজন ইলিশ ব্যবসায়ী বলেন, এখন ইলিশের দাম হওয়ার কথা সবচেয়ে কম। কিন্তু এখনই সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এ মাছ। ঘাটে এখন যেই ইলিশ দেখা যাচ্ছে তার সিংহভাগই সাগরের। ঘাটে মাছ বেশি দেখলে কী হবে, এসব মাছ এখান থেকে অন্যত্র চালান হয়ে যাচ্ছে, আবার ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছে। লোকাল নদীর মাছ হলে ইলিশের দাম ১৭০০ থেকে ২০০০ টাকা কেজি। সাগরের ইলিশ হওয়াতে হাজার-বারোশ’ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ৬০০ গ্রাম ওজনের একটি মাছ কিনতে হয়েছে ৯০০ টাকায়, ১৫০০ টাকা করে কেজি। কিন্তু এই মাছটির দাম হওয়া উচিত ছিলো ৪০০ টাকা। দামের কারণে বিত্তবানরাই ঠিকমতো ইলিশ খেতে পারছে না, নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের তো খাওয়ার প্রশ্নই উঠে না।
সচেতন মহলের মতে, এবার সকল পণ্যেরই দাম বাড়ায় এর প্রভাব ইলিশ মাছের উপরও পড়েছে। তাই ভরা মৌসুমেও ইলিশের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।