• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

স্বামী স্বরূপানন্দের জন্মস্থানে জন্মোৎসব

প্রকাশ:  ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১০:১০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 কোটি ভক্ত হৃদয়ের প্রাণের স্পন্দন অখণ্ডমণ্ডলেশ্বর শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের জন্মোৎসব উপলক্ষ্যে তারই পুণ্যজন্মস্থান চাঁদপুর পুরাণ আদালত পাড়াস্থ অযাচক আশ্রমে অনুষ্ঠিত দুদিনব্যাপী জন্মোৎসবের আজ শেষ দিন। গতকাল ২৫ ডিসেম্বর সোমবার উৎসবের অধিবাস দিবসের ভোর ৫টায় আশ্রম অঙ্গনে প্রেমধ্বনি, শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনি সহকারে আরতি কীর্তন ও অঞ্জলি প্রদানের মধ্যে দিয়ে দুদিনব্যাপী উৎসবের সূচনা হয়। এদিন ভোর ৬টায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ভক্তবৃন্দের ব্যাপক উপস্থিতিতে পুরাণবাজার পূর্ব শ্রীরামদী দাসপাড়া হতে হরিওঁ কীর্তন সহকারে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। পরম পুরুষ অখণ্ড মণ্ডলেশ্বর শ্রীশ্রীমৎ স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের প্রতিকৃতি নিয়ে হরিওঁ কীর্তন সহকারে ভক্তগণ পুরাণবাজারের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুরাণবাজার লোহারপুল সংলগ্ন গুরু ভ্রাতা নির্মল দাসের বাড়িতে প্রত্যাবর্তন করেন। সেখানে ভক্তগণ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে মনের আনন্দে নেচে গেয়ে হরিওঁ কীর্তন করেন। তাদের পরিবেশিত কীর্তনে ভোরের পরিবেশে ধর্মীয় অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে। পরে সকাল ১১টায় আশ্রম অঙ্গনে প্রেমধ্বনি, শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি সহকারে শ্রীবিগ্রহ ও শ্রীশ্রী বাবামণির পুণ্য প্রতিচ্ছবি স্থাপন করা হয়। দুপুরে দূর দূরান্ত থেকে আগত ভক্তবৃন্দসহ স্থানীয়গণ আশ্রমাঙ্গনে প্রসাদ গ্রহণ করেন পরম ভক্তি সহকারে। বিকেল ৪টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে নীরব নাম জপ যজ্ঞ, ব্রহ্মগায়ত্রী গীত ও হরিওঁ কীর্তন, মাতৃসম্মেলন ও স্বরূপানন্দ সংগীতানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
‘মাতৃআরাধনায় শ্রী শ্রীমৎ স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের ভূমিকা’ শীর্ষক মাতৃসম্মেলনের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আশ্রম অধ্যক্ষ স্বরূপ ব্রহ্মচারী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সম্মিলিত অখণ্ড সংগঠন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুজিত কুমার দে। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা মলিনা সরকারের সভাপতিত্বে নারী নেতৃবৃন্দের মাঝে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট নারী সংগঠক মনীষা চক্রবর্তী, শব্দ সৈনিক কৃষ্ণা সাহা, জয়া রায়, ইরা ভৌমিক, কল্যাণী মজুমদার, পুষ্প দাস, পাপড়ি সাহা, সুমিতা ঘোষ প্রমুখ।
মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন কান্তা সরকার আর ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বাংলাদেশ অখণ্ড সংগঠন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক গৌতম সাহা। দ্বৈতভাবে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মৃদুল কান্তি দাস ও দ্বীপাম্বিতা দাস। বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী মানিক রায়ের পরিবেশনায় অনুষ্ঠানে স্বরূপানন্দ সংগীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সংগীত শিল্পীগণ। এই সময় নেতৃবৃন্দের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সম্মিলিত অখণ্ড সংগঠনের সহ-সভাপতি তাপস সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক সুধাংশু সূত্রধর, সদস্য অরুণ কুমার ঘোষ (হরিওঁ), চাঁদপুর অযাচক আশ্রম বোর্ড অব ট্রাস্টের সাধারণ সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, চাঁদপুর অযাচক আশ্রম পরিচালনা পর্ষদের সহ-সভাপতি দুলাল দাস, সাধারণ সম্পাদক তাপস চন্দ্র দাস, সদস্য প্রণব সাহা, মনতোষ সাহা, সঞ্জয় কুমার ভৌমিক, উৎপল দাস, টিটু দাস, পুরাণবাজার বারোয়ারি দুর্গা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি মানিক সাহা, জেলা হিন্দু মহাজোটের সভাপতি শিবু চন্দ্র দাস, চাঁদপুর বিবেকানন্দ যুব সংঘের সভাপতি জয়রাম রায় প্রমুখ।
বক্তাগণ নারীর প্রতি স্বরূপানন্দের অগাধ ভক্তি ও শ্রদ্ধাবোধের কথা ব্যাপকভাবে উপস্থাপন করেন এবং বলেন, মা, নারী, ভাগ্নি, জয়া, জননী তারা সকল ক্ষেত্রেই সম্মানের অধিকারী। সংসার থেকে শুরু করে সকল স্থানেই নারীদের অবদান অনস্বীকার্য। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে পৌরোহিত্য করেন আশ্রম অধ্যক্ষ স্বরূপ ব্রহ্মচারী। আজ ২৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার আশ্রম অঙ্গনে ভোর ৬টায় ঊষা কীর্ত্তনাঞ্জলি ও হরিওঁ কীর্তন, সকাল ৮টায় নবীন যুগের নববেদ, শ্রীশ্রী অখণ্ড সংহিতা পাঠ, অখণ্ডমন্ডলেশ্বর শ্রীশ্রী স্বামী স্বরূপানন্দ পরমহংসদেবের শুভ আবির্ভাব দিবসের বিশেষ সমবেত উপাসনাসহ সকাল সাড়ে ১০টায় হরিওঁ কীর্তন সহযোগে চাঁদপুর শহরে বের হবে সম্প্রীতি র‌্যালি।
দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠিত হবে চরিত্রগঠন আন্দোলন শীর্ষক ধর্মীয় আলোচনা সভা। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি এমপি এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র জিল্লুর রহমান জুয়েল ও চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত বিদগ্ধ আলোচকবৃন্দ। দুপুর ২টায় অনুষ্ঠিত হবে মহাপ্রসাদ বিতরণ ও হরিওঁ কীর্তন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শান্তিবাচনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভ সমাপ্তি হবে বলে জানা যায়। আয়োজিত অনুষ্ঠানসমূহে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষ সকলের উপস্থিতি কামনা করেছেন পুণ্যজন্মস্থান চাঁদপুর অযাচক আশ্রম ও চাঁদপুর অযাচক আশ্রম বোর্ড অব ট্রাস্ট এবং বাংলাদেশ সম্মিলিত অখণ্ড সংগঠনের সেবক-সেবিকাবৃন্দ।

 

সর্বাধিক পঠিত