• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

ওমানে অগ্নিকাণ্ডে নিহত হোসেনের বাড়িতে শোকের মাতম

প্রকাশ:  ১৬ মার্চ ২০২৪, ১২:৩৮
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 ওমানে অগ্নিকাণ্ডে নিহত শাহরাস্তির হোসেন মিয়াজীর (২২) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। একমাত্র পুত্র সন্তান ও পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎসকে হারিয়ে নির্বাক পিতা আব্দুস সালাম (৭০)। মা নুরজাহানের গগণবিদারী চিৎকারে ভারি হচ্ছে আশপাশের পরিবেশ।
নিহত হোসেন মিয়াজী ওমানের উত্তরাঞ্চলীয় শহর বুরাইমির একটি সোফা কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত সোমবার (১১ মার্চ) ভোর রাতে ওই কারখানায় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে যে ক’জন  নিহত হন, হোসেন তাদের একজন।
হোসেন মিয়াজী শাহরাস্তি পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের নিজমেহার গ্রামের যুগী বাড়ির আব্দুস সালামের একমাত্র পুত্র। পরিবারের সচ্ছলতার আশায় এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ২০১৯ সালে বিদেশ যান তিনি। করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে ঋণের দায় কাটিয়ে উঠতে পারেনি পরিবারটি। এমন পরিস্থিতিতে হোসেনের মৃত্যুতে ঋণের দায় ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে ওই পরিবারের উপর।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার বিকেলে হোসেন মিয়াজীর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, নিহতের মা ও বোনেরা আহাজারি করছেন। বাবা আব্দুস সালাম নির্বাক। হোসেন নিহত হওয়ার খবরে তার বাড়িতে এসে ভিড় করেছেন পাড়া-প্রতিবেশীরা।
জানা যায়, হোসেনের বাবা আব্দুস সালাম এক সময় রিক্সা চালাতেন। বর্তমানে বয়সের ভারে ভারাক্রান্ত তিনি। পরিবারের সচ্ছলতার আশায় ২০১৯ সালে হোসেন ওমান যান। করোনাকালীন বেকারত্ব ও কাগজপত্র বৈধ করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত তাদের ৮ লক্ষ টাকা ঋণ হয়েছে।
হোসেনের ছোট বোন মরিয়ম আক্তার জানান, নিজের ভাইয়ের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে শ^শুর বাড়ি এলাকার এনজিও থেকে ঋণ এনে দিয়েছেন। একটি দুর্ঘটনা তাদের সবাইকে পথে বসিয়ে দিলো।
হোসেনের মা নুরজাহান বেগম বিলাপ করতে করতে বলেন, বেশি লাভের আশায় ছেলেকে বিদেশে পাঠিয়েছি, আজ আমার সব শেষ। হোসেনের মৃতদেহ দেশে আনতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান পরিবারের সদস্যরা। শেষবারের মতো হোসেনকে এক নজর দেখতে আকুতি জানান তারা।
পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোঃ মিজানুর রহমান জানান, হোসেনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হোসেন অত্যন্ত বিনয়ী ও কর্মঠ ছিলো। তার লাশ দেশে আনতে পরিবারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।

 

সর্বাধিক পঠিত