• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৫ কার্তিক ১৪৩২
  • ||
  • আর্কাইভ

জ্যামাইকাতে তাণ্ডব চালিয়ে কিউবার দিকে এগোচ্ছে মেলিসা

প্রকাশ:  ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৫০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

ক্যারিবীয় দ্বীপরাষ্ট্র জ্যামাইকাতে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় মেলিসা আঘাত হেনেছে। গতকাল মঙ্গলবার ৫ মাত্রার এ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। এটি দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। মেলিসা এখন ৪ মাত্রার ঘূর্ণিঝড় হিসেবে পার্শ্ববর্তী দেশ কিউবার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। খবর রয়টার্স।
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, জ্যামাইকার দক্ষিণ-পশ্চিমের নিউ হোপ শহরের কাছে ঘণ্টায় ১৮৫ মাইল (২৯৫ কিলোমিটার) গতিবেগে আঘাত হানে মেলিসা, যা সাফির সিম্পসন স্কেলে নির্ধারিত ৫ মাত্রার শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের ন্যূনতম গতিবেগের (ঘণ্টায় ১৫৭ মাইল বা ২৫২ কিলোমিটার) চেয়ে বেশি। সাফির সিম্পসন হলো একধরনের মানদণ্ড বা স্কেল, যা ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি ও সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি নির্ধারণে ব্যবহৃত হয়। এটি ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতাকে ৫টি মাত্রা দিয়ে বুঝিয়ে থাকে। ৫ মাত্রা হলো সাফির সিম্পসন স্কেলের সর্বোচ্চ মাত্রা।
স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেছেন, জ্যামাইকার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সেন্ট এলিজাবেথ অঞ্চল সম্পূর্ণ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সেখানে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় আছেন।
ঘূর্ণিঝড়ের পর সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জ্যামাইকার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হলনেস বলেন, 'এখন পর্যন্ত আমরা যেসব তথ্য পেয়েছি, তাতে হাসপাতালগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এমনকি সড়ক অবকাঠামোও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এখনো পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। তবে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনা করে আমরা কিছু প্রাণহানির আশঙ্কা করছি।'
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) বলেছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে জ্যামাইকার পাহাড়ি এলাকার মানুষের জন্য ভূমিধস ও বন্যার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি এখন কিউবার দ্বিতীয় বৃহত্তম জনবহুল শহর সান্তিয়াগো দে কিউবা শহরে আঘাত হানতে পারে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার বিশেষজ্ঞ অ্যান-ক্লেয়ার ফোজান্টান প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, 'এটি একটি বিপর্যয়কর পরিস্থিতি।' তিনি চার মিটার উচ্চতা পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হওয়ার আভাস দিয়েছেন। মেলিসা জ্যামাইকার দক্ষিণ-পশ্চিমে আঘাত হানে।
স্থানীয় সরকারের মন্ত্রী ডেসমন্ড ম্যাককেঞ্জি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সেন্ট এলিজাবেথ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এলাকার একমাত্র সরকারি হাসপাতাল বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছে এবং এর একটি ভবন গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়েকটি পরিবার তাদের বাড়িতে আটকা পড়েছিল। তবে উদ্ধারকর্মীরা কিছু মানুষের কাছে পৌঁছাতে পেরেছেন। এর মধ্যে চারটি শিশুও আছে।
ম্যাককেঞ্জি আরও বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে প্রায় ১৫ হাজার জ্যামাইকান নাগরিক অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে ছিলেন। সরকার ২৮ হাজার মানুষকে বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। তবে অনেকেই বাড়ি ছাড়তে রাজি হননি।
দ্য ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব দ্য রেড ক্রস বলেছে, জ্যামাইকার প্রায় ১৫ লাখ মানুষের ওপর এ ঘূর্ণিঝড়ের সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে।

 

সর্বাধিক পঠিত