• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
  • ||
  • আর্কাইভ

হাজীগঞ্জে যুবলীগের কমিটি নিয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ॥ ভাংচুর লুটপাট

প্রকাশ:  ১৮ জুলাই ২০১৯, ০৯:৩২
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

হাজীগঞ্জের কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে যুবলীগের দু গ্রুপের মাঝে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় রামপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতি নেতার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর ও লুটের ঘটনা ঘটেছে বলে ক্ষতিগ্রস্তরা জানায়। এই ঘটনায় একাধিক ব্যক্তি আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তিসহ স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আলমগীর হোসেন রনির নেতৃত্বে পুলিশ বাজারে লাঠিচার্জ করার কারণে লুটপাটসহ বড় ধরনের সংঘর্ষ এড়ানো সম্ভব হয়েছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ জুলাই উপজেলার ৪নং কালচোঁ দক্ষিণ ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটিতে শ্যামল শীলকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করে উপজেলা যুবলীগ। ওই কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে পদবঞ্চিতরা ক্ষোভে ফুঁসে উঠে একই দিন বিকেলে বাজারে বিক্ষোভ মিছিলের প্রস্তুতি নেয়। এদিকে বিক্ষোভ মিছিল না করার জন্যে বলেন রামপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও গাউছিয়া টাওয়ার এবং গাউছিয়া শপিং সেন্টারের স্বত্বাধিকারী এস.এম. মানিক। কিন্তু ঘোষিত যুবলীগের কমিটি আনার জন্যে একটি পক্ষ এ ব্যবসায়ী নেতাকে দায়ী করে। এ ধারণা থেকে ওই পক্ষ গাউছিয়া শপিং সেন্টরে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়।
ব্যবসায়ীরা ও স্থানীয়রা জানান, এদিন সকালে উত্তেজনার এক পর্যায়ে বাজারের উত্তর-পূর্বদিকে অবস্থিত পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীদের সাথে কথা বলতে যান এস.এম. মানিক। এমন সময় পদবঞ্চিত কিছু বিক্ষুব্ধ যুবলীগ নেতা-কর্মী লাঠিসোটা হাতে নিয়ে বাজারের দক্ষিণ দিকে ছুটে আসেন এবং বেশ ক’টি দোকানঘরসহ গাউছিয়া শপিং সেন্টারে হামলা চালায়। এতে দু গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। কিছু সময়ের জন্যে বাজারের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ব্যাপক লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
রামপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এস.এম. মানিক বলেন, বাজারে যুবলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ এড়াতে আপ্রাণ চেষ্টা করি। কিন্তু  লাঠিসোটা নিয়ে রতন খলিফা, সোহাগ খলিফা ও নজরুলের নেতৃত্বে পদবঞ্চিতরা আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গাউছিয়া শপিং সেন্টারসহ বেশ ক’টি দোকানঘরে হামলা চালায়। তাদের সাথে মিলন, মতিন, হুজু, স্বপন, রহমত ও ফারুকসহ প্রায় শতাধিক লোকজন ছিলো।
তিনি বলেন, তারা আমার প্রতিষ্ঠানের ক্যাশ থেকে নগদ প্রায় ১৪ লাখ টাকা নিয়ে যায় এবং প্রায় দুই-তিন লাখ টাকার মালামালের ক্ষতিসাধন করে।
এস.এম. মানিক আরো বলেন, যুবলীগের কমিটি গঠনের দিন থেকে এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। আমি বাজারের শান্তি-শৃঙ্খলার লক্ষ্যে তাদের (পদবঞ্চিত) নেতৃত্ব দেয়া আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমান মোল্লাসহ কয়েকজন নেতার সাথে কথা বলি। কিন্তু তারা গুরুত্ব না দিয়ে বরং নেতা-কর্মীদের উস্কে দিয়েছেন। যার ফলে আজ এ সংঘর্ষ এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। তিনি তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর ও নগদ টাকা লুটের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান মোল্লা বলেন, তাদের অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছি। যতোটুকু জেনেছি, সম্প্রতি ইউনিয়ন যুবলীগের কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন কমিটি দেয়া হয়েছে। এ কমিটিতে যুবলীগের নেতা-কর্মীদের মূল্যায়ন না করে বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের স্থান দেয়া হয়েছে। যার ফলে ইউনিয়ন যুবলীগ নেতা-কর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
তিনি আরো বলেন, তারা (পদবঞ্চিতরা) আজ বিকেল ৩টায় প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছে। কিন্তু সকালেই যুবলীগ নেতা সুজন, নজরুল, রতন ও সোহাগের উপর হামলা চালিয়ে তাদের গুরুতর আহত করা হয়। যার ফলে দু পক্ষের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ আলমগীর হোসেন রনি জানান, পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে এবং ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। অভিযোগ দিলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।

 

 

সর্বাধিক পঠিত