• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২
  • ||
  • আর্কাইভ

পুরাণবাজারে আবারো শ্রমিকের মৃত্যু ॥ ঘাটের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী

প্রকাশ:  ৩১ অক্টোবর ২০১৮, ০৯:১৭
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রিন্ট

 চাঁদপুর পুরাণবাজার ভূঁইয়ার ঘাট এলাকায় মালামাল ডেলিভারি দিতে গিয়ে আরো এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। ক’মাস আগে একই ঘটনায় আরো এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ঘাটের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন।
    জানা যায়, গত ২৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় পুরাণবাজার কাঁচামাল পট্টির মোস্তফা মোল্লার পেঁয়াজের ঘরের শ্রমিক খোকন বেপারী ভূঁইয়ার ঘাট এলাকা দিয়ে চরফাতরা মোকামের রহিম মাঝির নৌকায় মালামাল ডেলিভারী দিতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। তিনি মাথায় বস্তায় নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নৌকায় মাল ডেলিভারী দিতে গিয়ে স্লিপ কেটে পড়ে গিয়ে মারাত্মক আহত হন। এ অবস্থায় তার সহকর্মীরা তাকে প্রথমে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু কর্মরত চিকিৎসক তার অবস্থা খারাপ দেখে তাকে ঢাকা মেডিকেলে রেফার করলে রাতেই  তার আত্মীয়-স্বজন তাকে ঢাকা নিয়ে যায় এবং ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করায়। শেষ রক্ষা আর হয়নি। পরদিন গতকাল ৩০ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১১টায় তিনি  চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন।
    তার মৃত্যুর সংবাদে পুরাণবাজারে কর্মরত শ্রমিকদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে। শোকের ছায়া নেমে আসে তার পরিবারের মাঝে। একমাত্র উপার্জনশীল ব্যক্তির  মৃত্যু সংবাদে তার স্ত্রী কন্যাসহ আত্মীয়-স্বজন কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। পুরাণবাজার মোম ফ্যাক্টরীর বাসিন্দা খোকন বেপারী (৩৭) ২ মেয়ে ও ১ নাবালক সন্তান রেখে যান। গতকাল এশার নামাজ শেষে পুরাণবাজার জামে মসজিদের সামনে তার নামাজে জানাজা অনুষ্টিত হয়। সহকর্মীর মৃত্যুতে পুরানবাজার শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যগণ তার প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কর্মবিরতি পালন করেন। জানা যায়, নিহত খোকন বেপারী উত্তর অঞ্চল গদিঘর লেবার ইউনিয়নের সদস্য। তার এই নির্মম মৃত্যুতে গদিঘর লেবার ইউনিয়ন গভীর শোক প্রকাশ করে তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি আব্দুল হক, সাধারণ সম্পাদক মোঃ হারুন ও সাংগঠনিক সম্পাদক পান্নু বেপারীসহ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তারা এ ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে বলেন,  নিহত খোকন বেপারীর নাবালক সন্তানরা যাতে ২ মুঠো ভাত খেয়ে বেঁচে থাকতে পারে সেই দিকে তার মালিক পক্ষ নিশ্চয়ই একটু ব্যবস্থা নিবেন।  তারা বলেন, আমরা শ্রমিকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঝড় বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিভিন্ন নৌকায় বা ট্রলারে মালামাল ডেলিভারী দিয়ে থাকি। কিন্তু মালামাল ডেলিভারী দেয়ার রাস্তাগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সামান্য বৃষ্টিতে রাস্তাগুলো কাদায় পরিপূর্ণ হয়ে যায়। নেই পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা। আমদানী রপ্তানীর ঘাটগুলোও অনেকটা নাজুক। বৃহৎ বাজার অনুপাতে ঘাটের সংখ্যা কম হওয়ায় অধিক হারে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মালামাল আমদানী রপ্তানী করতে হয়। ঘাটলার সংখ্যা বৃদ্ধিসহ মালামাল আমদানী রপ্তানীর রাস্তাগুলোর উন্নয়নের জন্যে আমরা দীর্ঘসময় ধরে দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু আমরা আশানুরূপ সাড়া পাইনি। আশাকরি মাননীয় মেয়র, চাঁদপুর চেম্বার অব কমার্স ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ জনপ্রতিনিধিগণ এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে এগিয়ে আসবেন।
    উল্ল্যেখ্য, ক’মাস আগে পুরাণবাজার  সুভাষ পোদ্দারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ১ শ্রমিক নৌকায় মালামাল ডেলিভারী দিতে গিয়ে মারাত্মকভাবে আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।