• পরীক্ষামূলক সম্প্রচার
  • শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
  • ||
  • আর্কাইভ

চাঁদপুরই আমার প্রথম ও শেষ প্রেম

প্রকাশ:  ০৭ মে ২০২৩, ১২:৩৫
উজ্জ্বল হোসাইন
প্রিন্ট

চির চেনা চাঁদপুর। তাঁর প্রেমেই জীবনের অর্ধেকটা সময় শেষ। বয়স ৮-৯ বছর হবে তখন আমি ক্লাস ওয়ানে পড়ি, আব্বাস আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পৈত্রিক নিবাস উত্তর তারাবুনিয়ায়। বাবা সামান্য মুদি দোকানী। ছোটবেলা থেকেই বাবার ব্যবসা দেখার পাশাপাশি পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছি। বাবা যেদিন ব্যবসার কাজে চাঁদপুর যেতেন সেদিন ব্যবসা আমি দেখতাম। অনেকে ব্যঙ্গ করে বলতেন এটুকু ছেলে কি করে ব্যবসা সামলায়। তবে ব্যবসা সামলানো পাশাপাশি পড়াশুনায় মনোযোগ ঠিকই থাকতো। বাবা চাঁদপুর থেকে চলে আসামাত্রই। দোকান থেকে বেড়িয়ে পড়তাম। সহপাঠিদের সাথে খেলাধুলায় মগ্ন থাকতাম। বাবাকে প্রায়ই বলতাম আমি চাঁদপুরে যাবো। চাঁদপুর জেলা শহরের একমাত্র ব্যবসা কেন্দ্র। তাই নদী পাড় হয়ে চাঁদপুর ও পাশ্ববর্তী জেলা ও উপজেলার মানুষ এই ব্যবসা কেন্দ্রেই আসতে হয়। মাঝে মাঝে বাবার সাথে দোকানের সদাই আনতে চাঁদপুরে আসতাম উত্তাল পদ্মা-মেঘনা পাড়ি দিয়ে। যদিও চাঁদপুরের কাছাকাছি এসে ট্রলারে অনেক ভয় পেতাম কিন্তু যখন এসে পড়তাম তখন অন্য রকম একটা অনুভূতি কাজ করতো। এখানে বলা দরকার ১৯৮৮ সালের প্রলয়ঙ্করী বন্যায় পৈত্রিকা ভিটা হারিয়ে শরীয়তপুরে উত্তর তারাবুনিয়ায় আশ্রয় নেই। এরপর আবার নদীর নিজেদের জমি-জমা ভেসে উঠে তখন আবার রাজরাজেশ্বরের উত্তর বলাশিয়ায় আবাস্থল হয়। এরই মাঝে আব্বাস আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণি পাস করে। বিষ্ণুপুর ইউনিয়নে লালপুরে নানা বাড়িতে চলে আসি। পরিবার থেকে যায় রাজরাজেশ্বরে। ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে আমিরাবাদ গোলাম কিবরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হই। পড়াশুনা চলতে থাকে মাঝে কানুদি মিয়ার ঘাট থেকে চাঁদপুর চলে আসতাম। আবার মাঝে মাঝে বন্ধুদের সাথে সাইকেলে করেও চাঁদপুর আসতাম। উদ্দেশ্য থাকতো কয়েকটি তার মধ্যে বই, খাতা, কলম কেনা আবার সুযোগ পেলে ছায়াবানি কিংবা চিত্রলেখা সিনেমা হলে ছবি দেখে যেতাম। যেদিন লঞ্চে আসতাম সেদিন ছবি পুরোটা দেখতে পেতাম না কারণ সাড়ে তিনটায় লাস্ট লঞ্চ ছেড়ে যেতো। লঞ্চ পাবো না বলে ছবি পুরোটা না দেখেই বের হয়ে যেতাম। সুযোগ পেলেই কারণে অকারণে বন্ধুদের সাথে চাঁদপুর চলে আসতাম। যেদিন সাইকেলে করে বিটি রোড দিয়ে আসতাম সেদিন পুরো ছবি শেষ করে বাড়ি ফিরতাম। তবে ছবি দেখে অন্য বন্ধুদের কাছে কাহিনী বলতাম প্রায় সপ্তাহখানেক। এভাবে কখন যে এসএসসি পরীক্ষার সময় চলে আসলো বুজতেই পারিনি। এসএসসির দারপ্রান্তে এসে মনে মনে চাঁদপুরের প্রতি আরোও গভীর মমত্ববোধ জেগে উঠে। মনে রঙিন স্বপ্ন দেখি কবে চাঁদপুরে স্থায়ী হবো। ১৯৯৯ সালে ২ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা শেষ হলে বেশিরভাগ সময় চাঁদপুরেই কাটিয়ে দেই। খোঁজ নিতে থাকি কোথায় থাকা যায়। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হলো ওই বছরেরই জুন মাসে বিদ্যালয়ের ৬৪জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র চারজন পাস করি। আর আমরা যে ৪ জন পাস করি, সকলেই প্রথম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হই। এসএসসি পাস করার পর মনে আরো একটি স্বপ্ন জাগে রাজধানীর বাসিন্দা হবো। তবে সে স্বপ্নটি মনের মাঝেই রয়ে যায়। কারণ রাজধানীতে আমার থাকার কোনো জায়গা ছিলো না। তাই প্রথম প্রেম চাঁদপুরেই রয়ে যাই। চাঁদপুর সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি। এরই মাঝে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে আমার গুরু পিএম বিল্লাল ভাইয়ের সাথে পরিচয় হয়। বিল্লাল ভাই শিশু থিয়েটার ও নটমঞ্চে সাধারণ সম্পাদক, আমরা নাটকের রিহার্সেল করতাম গণফোরামের অস্থায়ী কার্যালয়ে (বর্তমানে বিল্লাল নাসারি)। যেহেতু রাস্তার পাশেই তাই আমাদের নাটকের রিহার্সেল দেখার জন্য অনেকে মানুষ জানালা দিয়ে উকি দিতো। আমার সবচে কাছে বন্ধু দৌলত হোসেন শান্ত ছিলেন যে কোনো নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র। আর আমি কখনও পার্শ্ব ও কমেডি চরিত্রে অভিনয় করি। তবে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এসে চাঁদপুরের সকল সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রিয়মুখদের সাথে পরিচয় হয়। সেই সময়ই চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক কাজী শাহাদাত ছিলেন শিশু থিয়েটারের প্রধান উপদেষ্টা। আমরা বন্ধুরা মিলে বাঙালি সংস্কৃতি মঞ্চ চাঁদপুর জেলা শাখা (জাতির জনকের আদর্শে সাংস্কৃতিক সংগঠন সমূহের জোট) কমিটি করি। শুরু থেকেই চাঁদপুরে বাঙালি সংস্কৃতি মঞ্চের বিভিন্ন সফল কার্যক্রম সম্পন্ন করি আমরা। প্রথম দিকে সংগঠনের সভাপতি ছিলেন প্রয়াত জ্যোৎস্না মজুমদার, দৌলত হোসাইন শান্ত সাধারণ সম্পাদক আর আমি সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলাম। এরপর চাঁদপুরের প্রিয়মুখ প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী প্রয়াত কাজী মাহাবুবুল হক সংগঠনের সভাপতি হন। আর আমরা স্বপদেই বহাল থাকি। কিন্তু পড়াশুনা ও সাহিত্য সংস্কৃতি একসাথে চলতে থাকে। চাঁদপুর ছেড়ে অন্য কোথাও চাকুরি কিংবা পড়াশুনার জন্য যাবো সেটা ভাবতেও পারিনি। কারণ চাঁদপুরের সকল বিষয় জানা শুনা হওয়ার কারণে কখনও চাঁদপুর ছেলে যাবো এটা মনে কোনো একবারের জন্য আসতো না।
চাঁদপুর সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি ও স্নাতক পাস করি। এরপর চাঁদপুর সরকারি কলেজে ইংরেজিতে মাস্টার্সে ভর্তি হই। তারপর চাঁদপুর ল কলেজ থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করি। কিন্তু নিজেকে প্রতিষ্ঠার জন্য চাঁদপুর ছেড়ে যাবো এটা ভাবনাতেই ছিলো না। কলেজে পড়াশুনা চলাকালীন আমেরিকা প্রবাসী ভিপি পলাশ (ফারুক আহমেদ পলাশ) ভাইয়ের সাথে আওয়ামী রাজনীতিতে জড়িয়ে যাই।   
এরই মধ্যে ২০০৮ সালে নির্বাচন চলে আসে। আমরা যেহেতু বাঙালি সংস্কৃতি মঞ্চের দায়িত্বে ছিলাম তাই সবসময়ই জাতির জনকের আদর্শকে সমুন্নত রেখে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড করেছি। ২০০৮ সালে কেন্দ্র থেকে চাঁদপুর-৩ আসনে ডাঃ দীপু মনি নমিনেশন পান। ডাঃ দীপু মনি নামটিই যেনো চির দীপ্ত। তাই শুরু থেকে দীপু আপার ভক্ত হয়ে যাই। আপা নমিনেশন নিয়ে চাঁদপুরে আসেন চাঁদপুর লঞ্চঘাটে (কয়লা ঘাট) ছাত্রনেতা জাহিদুল ইসলাম রোমান ভাই, জাহাঙ্গীর বেপারী ভাই, শেখ মোঃ মোতালেব, ওবায়েদুর রহমান তৃপ্তিসহ অনেকে ছাত্রনেতা লঞ্চঘাটে উপস্থিত ছিলেন। সাথে আমরা বাঙালি সংস্কৃতি মঞ্চের নেতৃবৃন্দ। আপা লঞ্চে আসছেন। লঞ্চঘাটে বিপুল সংখ্যক ছাত্র জনতা ও আওয়ামী ঘরানার সাংস্কৃতিক কর্মীরা। সকলের মুখে একটাই স্লোগান দীপু আপা, দীপু আপা। মিছিল সহকারে আপাকে সকলে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। এরপর আপার জয়লাভের জন্য শুরু হয় আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি মঞ্চের অভিরাম প্রচারণা। গণ মিছিল, গণ সংগীত ফকির আলমগীরের নেতৃত্বে (চাঁদপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সেখানে উপস্থিত ছিলেন দেশবরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু), ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে প্রচারণা, বিভিন্ন স্থানের দীপু আপার জন্য সাংস্কৃতিক প্রচারণা (যা চাঁদপুর কণ্ঠসহ চাঁদপুরের স্থানীয় দৈনিকে প্রকাশিত হয়েছে)। উদ্দেশ্য ছিলো একটা চাঁদপুরে আওয়ামী রাজনীতিতে আপাকে এমপি বানানো। সকল রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধ হয়ে আপা ২০০৮ সালের নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন। এরপর আপা পররাষ্টমন্ত্রী হয়ে দেশবাসীকে তাক লাগিয়ে দেন। এরপর ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একই সাথে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন। ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের ২০তম কাউন্সিলে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। একই সাথে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান। আপা বাংলাদেশের প্রথম নারী শিক্ষামন্ত্রী। দীপু আপার প্রতিটি নির্বাচনেই বাঙালি সংস্কৃতি মঞ্চ অকৃপণভাবে কাজ করে গেছে।
ছাত্র জীবন শেষ করে চাকুরি জীবনে প্রবেশ করি। ২০১০ সাথে চাঁদপুর পাসপোর্ট অফিসে চাকুরির মাধ্যমে চাকুরি জীবন শুরু হয়। এরপর ২০১২ সালে ১৬ জুন চাঁদপুর ডায়াবেটিক হাসপাতালে চাকুরি নেই (চলমান)। এমনভাবে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে যাই, তাই চাঁদপুরকে আর ছেড়ে যাওয়া হয়নি। সংসার ও চাকুরি চলতে থাকে সমান তালে। চাঁদপুরে যেহেতু থেকেছি তাই চাঁদপুরের নানাবিধ সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে কতটুকু মেলে ধরতে পেরেছি তা আর নাই বলি। এরপর ২০০৭ সালের শেষের দিকে চাঁদপুর রোটারী ক্লাবের যুব সংগঠন চাঁদপুর রোটার‌্যাক্ট ক্লাবে যুক্ত হই পরে ২০১৩-১৪ রোটারী বর্ষে সভাপতি নির্বাচিত হই। এরপর ২০১৫ সালে চাঁদপুর রোটারী ক্লাবে সদস্যপদ গ্রহণ করি। নানা ধাপ অতিক্রম (২০২৩-২৪) রোটারী বর্ষের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের জন্যে নির্বাচিত হই। চাঁদপুরে আরো একটি সৃজনশীল কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছি সেটা হলো চাঁদপুরে প্রথম বিতর্ক সংগঠন ‘চাঁদপুর বিতর্ক আন্দোলন’ প্রতিষ্ঠাতা সদস্য পরে এলিট সদস্য ছিলাম। কয়েক বছর কালেরকণ্ঠ শুভ সংঘের সহ-সভাপতি (প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে) ছিলাম। এরপর চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য (বর্তমানে সাধারণ সম্পাদক) হিসেবে মনোনীত হই। চাঁদপুরে বিতর্কের প্রসারে চাঁদপুর কণ্ঠ বিতর্ক ফাউন্ডেশন যা করেছে তা ইতিহাসের পাতায় অবশ্যই লেখা থাকবে। কারণ এটিই একমাত্র বিতর্ক সংগঠন যেটি একটানা ১২ বারেরও বেশি বিতর্ক উৎসব করে চাঁদপুরে অনন্য মাইলফলক স্থাপন করেছে।
চাঁদপুরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংগঠনে নিজে সম্পৃক্ত রয়েছি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রত্যয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি চাঁদপুর যুব ফাউন্ডেশন, সহ-সভাপতি বঙ্গবন্ধু আবৃত্তি পরিষদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক বাঙালি সংস্কৃতি মঞ্চ ও নটমঞ্চ, সাধারণ সম্পাদক বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ, চাঁদপুর জেলা শাখা ইত্যাদি।
চাঁদপুরে প্রথম জেলা ব্র্যান্ডিং-যেটির রূপকার তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুস সবুর মন্ডল (বর্তমানে অতিরিক্ত সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়)। তিনি চাঁদপুরের মানুষকে দেখিয়েছেন কিভাবে একটি জেলাকে সারাদেশে ব্যাপক পরিচিতি করে তোলা যায়। আর তিনি সেটি করেছেনও বিনিময়ে তিনি পেয়েছেন জনপ্রশাসন পদক। আর এই জেলা ব্র্যান্ডিংয়ের ব্র্যান্ডবুক ‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর’ আমার হাতে তৈরি হয়েছে এটি আমার জীবনের সেরা পাওয়া। চাঁদপুর জেলা ব্র্যান্ডিং কমিটির কমিটি (চাঁদপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর দেলোয়ার হোসেন, চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এমএ মতিন মিয়া, পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার, চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক কাজী শাহাদাত, অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা, কবি ও ছড়াকার ডাঃ পীযূষ কান্তি বড়ুয়া, মুহাম্মদ ফরিদ হাসান, বিতার্কিক রাসেল হাসান) সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় দেশের প্রথম জেলা চাঁদপুর ব্র্যান্ডিংবুক প্রকাশিত হয় ‘ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর।’ সত্যি তাই ইলিশের বাড়িই যেনো চাঁদপুর। চাঁদপুরকে পর্যটন শিল্পের আলোক-সম্পাতে আনতে 'ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর'-ই হয়েছে এখন অদ্বিতীয় শ্লোগান। কেবল ইলিশ নয়, মেঘনায় নৌ-বিহার ও জোছনা আস্বাদন কিংবা মেঘনার চরে যান্ত্রিক জীবনের ক্লেশ এড়িয়ে দুদিনের নির্মল অবকাশযাপনের জন্যে চাঁদপুর অতুলনীয়। আর আমি এই প্রকাশনায় প্রচ্ছদ ও গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজটি করতে পেরেছি সেজন্য নিজেকে ধন্য মনে করছি। এরপর বইটি চারবার পুনঃমুদ্রন হয়েছে প্রতিবারই আমি গ্রাফিক্স ডিজাইনের কাজটি করতে পেরেছি।
এছাড়াও চাঁদপুর সরকারি কলেজের ৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে স্মারক গ্রন্থ ‘স্বর্ণস্মৃতি’ প্রকাশনায় যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করি। কলেজের অনন্য প্রকাশনা ‘স্বর্ণস্মৃতি’র আহ্বায়ক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক ও কলেজের প্রাক্তন ছাত্র কাজী শাহাদাত, যুগ্ম আহ্বায়ক-হাসান আলী (প্রবীণ লেখক), প্রণব মজুমদার (সম্পাদক-অর্থ কাগজ), উজ্জ্বল হোসাইন, সদস্য সচিব ছিলেন লেখক ও গবেষক মুহাম্মদ ফরিদ হাসান, পুরানবাজার কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার, চাঁদপুর সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোঃ সাইদুজ্জামান, অগ্রজ বড়ভাই তুল্য রোটাঃ শাহেদুল হক মোর্শেদ, স্নেহের আল-আমিন, করিতকর্মা রাজন চন্দ্র দে, লেখক ও সমাজকর্মী এইচএম জাকির। কমিটির সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ‘স্বর্ণস্মৃতি’ চাঁদপুর সরকারি কলেজের অনন্য গ্রন্থ হিসেবে স্থান করে নিয়েছে এটি নির্দিধায় বলা যায়।
কর্মের তাগিদে বা সৃজনশীলতায় চাঁদপুরে প্রায় অর্ধশতাধিকের মতো গ্রন্থের গ্রাফিক্স ডিজাইন বা সম্পাদনায় সম্পৃক্ত থেকেছি। তাই চাঁদপুরের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সামাজিক নানা কর্মকাণ্ডে নিজেকে মেলে ধরতে পেরে নিজেকে আরো বেশি ধন্য মনে করছি।
শুরু থেকে এখন পর্যন্ত বলা যায়, চাঁদপুরই আমার প্রথম ও শেষ প্রেম। যে প্রেমের কারণে ছেড়ে যেতে পারিনি চাঁদপুরকে।
লেখক : উজ্জ্বল হোসাইন, সাংস্কৃতিক সংগঠক ও সমাজকর্মী, চাঁদপুর।

 

 

সর্বাধিক পঠিত